গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ রাসেলের বাবা-মা পেলেন নিজের ঠিকানা। নিজেদের জায়গা-জমি না থাকায় শহীদ হওয়ার পর রাসেলের লাশ তার চাচার জায়গায় দাফন করা হয়। জানতে পেরে এই বীর শহীদের পিতা-মাতার জন্য জায়গার ব্যবস্থা করে সরকার। তারই অংশ হিসেবে গতকাল বুধবার শহীদ রাসেলের পিতা-মাতার কাছে জমির দলিলাদি তুলে দিলেন ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মোখতার আহমেদ। এ সময় নেত্রকোণার জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস (ডিসি), নেত্রকোণার পুলিশ সুপার (এসপি) মির্জা সায়েম মাহমুদ পিপিএম, বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ফারজানা আক্তার ববি, বারহাট্টা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী তালুকদারসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। জানা যায়, শহীদ রাসেল বারহাট্টা উপজেলার নুরুল ইসলাম ওরফে মুন্সি মিয়া ও কুলছুমা আক্তার দম্পতির ছেলে। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ১৯ বছর। গত ৫ আগস্ট গাজীপুর জেলার মাওনায় ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে তিনি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ- বিজিবি’র গুলিতে আহত হন।
রাসেলকে রাস্তা থেকে সরানোর জন্য বিজিবি তার পায়ে একটি গুলি করে। এরপরও অনড় থাকায় তাকে আরো দুইটি গুলি করা হয়। উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে চিকিৎসা দিকে অস্বীকার করেন চিকিৎসকরা। সেখান থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে নিয়ে ভর্তি করানোর পর তিনি মারা যান। শহীদ রাসেলের বাবা-মায়ের ভিটে-মাটি বা অন্য কোনো জমিজামা নাই। তাই রাসেলের লাশ হাসপাতাল থেকে নিয়ে এসে বারহাট্টা উপজেলার বাউশী ইউনিয়নের সুসং ডহরপাড়া গ্রামে তার চাচা কামরান হোসেন দুদু মিয়ার জমিতে দাফন করা হয়।
বাউশী ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা খুররম জাহ মুরাদ বলেন, রাসেলের বাবা-মায়ের হাতে ১০ শতাংশ জায়গার কবুলিয়তরামা তুলে দেয়া হয়েছে। জায়গাটি দশদার মৌজায় শাসনউড়া গ্রামে অবস্থিত। শহীদ রাসেলের মা কুলছুমা আক্তার বলেন, ছেলেটা গামের্ন্টে কাজ করতো, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে গিয়ে শহীদ হয়েছে। তাকেতো আর ফিরে পাবো না। তবে দেশ ভালো হলে তার আত্না শান্তি পাবে। ছেলেটার জন্য দোয়া চাই। আমাদের ভিটে-মাটি ছিল না। সরকার জায়গা দিয়েছে, আমরা খুবই সন্তোষ্ট। ইউএনও ফারজানা আক্তার ববি বলেন, ইতোপূর্বে শহীদ রাসেলের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। গতকাল বুধবার তার বাবা-মায়ের নামে জমির দলিলাদি হস্তান্তর ও তাদের গৃহের ভিত্তি-প্রস্থর স্থাপন করা হয়। ভবিষ্যতেও প্রয়োজনীয় সব প্রকার সহযোগিতা প্রদান করা হবে।