কন্যা সন্তানের বাবা হলেন শহীদ রাব্বি

প্রকাশ : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মাগুরা প্রতিনিধি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত মাগুরা জেলা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতা শহীদ মেহেদী হাসান রাব্বির স্ত্রী রুমি খাতুনের কোল জুড়ে এলো ফুটফুটে কন্যা সন্তান। গত বুধবার রাত পৌনে এগারোটার দিকে শহরের ল্যাব সিটি নামে বেসরকারি একটি প্রাইভেট হাসপাতালে তিনি এই কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। নবজাতকের আগমনে শহীদ পরিবারে আনন্দের পরিবর্তে এখন বিষাদের ছায়া। শহীদ রাব্বি দেখে যেতে পারলেন না তার সন্তানকে।

গত ৪ আগস্ট মাগুরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিতে ছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান রাব্বি (৩৪) নিহত হন। তিনি জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি মাগুরা পৌরসভার বরুণাতৈল গ্রামের মৃত ময়েন উদ্দিনের ছেলে। নিহত রাব্বির ভাই ইউনুস আলী জানান, রাব্বির স্ত্রী রুমি খাতুন সন্তানসম্ভবা ছিল। গত বুধবার রাতে ঘর আলো করে কন্যা সন্তান জন্ম দিয়েছেন তার ভাইয়ের স্ত্রী। আফসোস ভাই তার মেয়েকে দেখে যেতে পারল না। তার সন্তানও কোনোদিন বাবাকে দেখতে পারবে না। নবজাতক ও তার মা সুস্থ রয়েছে। সবার কাছে শহীদ রাব্বির সন্তান, তার মা ও পরিবারের জন্য দোয়া প্রার্থনা করেন তিনি। জানা গেছে, ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে মাগুরা-ঢাকা মহাসড়কের পারনান্দুয়ালী ব্যাপারীপাড়া জামে মসজিদ এলাকায় অবস্থান নেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও বিএনপির নেতাকর্মীরা। পাশে ঢাকা রোড বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থান নেন পুলিশের সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গুলিবিদ্ধ হন ছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান। তাকে উদ্ধার করে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি মারা যান। পরে ময়নাতদন্ত ছাড়াই তার লাশ দাফন করা হয়। হাসপাতালের পরিচালক মহসিন উদ্দিন বলেন, ওই দিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত আহত অবস্থায় ২৫ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মেহেদী হাসান ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফরহাদ হোসেন মারা যান। মেহেদীর বুকে ও ফরহাদ হোসেনের মাথায় গুলির আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে।

দুজনই একই এলাকায় সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। এ ঘটনায় নিহত মেহেদীর ভাই ইউনুস আলী বাদী হয়ে মাগুরার আওয়ামী লীগের সাবেক দুই সংসদ সদস্য (এমপি) সাইফুজ্জামান শিখর, বীরেন শিকদারসহ ১৩ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। সম্প্রতি আদালতের নির্দেশে রাব্বির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। নিহত শহীদ মেহেদী হাসান রাব্বির পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমান।