শেরপুরের মন্ডার খ্যাতি বিশ্বজুড়ে
স্বাদে-গন্ধে যার জুড়ি মেলা ভার
প্রকাশ : ২৮ নভেম্বর ২০২০, ০০:০০ | অনলাইন সংস্করণ
মনিরুজ্জামান রিপন, শেরপুর
স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয় শেরপুরের মন্ডা দেশের এক বিখ্যাত মিষ্টি। এ মিষ্টির খ্যাতি এখন বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। শেরপুরের এ সুস্বাদু মন্ডা দেশের গন্ডি পেরিয়ে এরই মধ্যে আমেরিকা, লন্ডন, কানাডা, দুবাই, সিঙ্গাপুরসহ প্রতিবেশী দেশ ভারতে যাচ্ছে হরহামেশাই। ই-কমার্স বা জেলা ওয়েবসাইট আওয়ার শেরপুরের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি হচ্ছে মাসে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ কেজি ম-া। এ জেলার মানুষ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বেড়াতে গেলে মিষ্টি হিসেবে বেছে নেন শেরপুরের মন্ডা। মিষ্টি হিসেবে মন্ডার যেন কোনো বিকল্প নেই। শেরপুর জেলা শহরসহ অন্য উপজেলার বিভিন্ন মিষ্টির দোকানে মন্ডার বিক্রি হয় প্রচুর। এর মধ্যে অনুরাধা, আদি গিরীশ ও স্বদেশের দোকানের মন্ডার চাহিদা বেশি। ফলে সন্ধ্যার পরপরই এসব দোকানের মন্ডা শেষ হয়ে যায়। মন্ডা ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে, এটি তৈরি করতে প্রথমে খাঁটি দুধ থেকে ছানা তৈরি করা হয়। ছানার সঙ্গে ক্ষীর, সামান্য চিনি ও এলাচ দানা দিয়ে দীর্ঘক্ষণ জ্বাল দিয়ে মন্ডার কাঁচামাল তৈরি করে পরে মন্ডা আকৃতি দেওয়া হয়। স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ছানা, ক্ষীর, এলাচ ও চিনির সমন্বয়ে উৎপাদিত মন্ডায় থাকে ভিটামিন এ, সি, ডি, বি-১২, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস, রিবোফ্লাভিন, ম্যাগনেশিয়াম ও নিয়াসিন। এসব উপাদান মানবদেহের জন্য খুবই উপকারী। যারা সরাসরি দুধ খেতে পারেন না, তাদের মন্ডা খেতে কোনো সমস্যা হয় না। শেরপুর জেলা ওয়েবসাইট সূত্র জানায়, যারা শেরপুরের মন্ডা খেয়েছেন তাদের অনেকেই ভূয়সি প্রশংসা করে তাদের ফেইসবুক পেইজে নানা বাক্য লিখেছেন। ঢাকার বাসিন্দা আইনুন্নাহার চৌধুরী লিখেছেন, যদি মন্ডার অর্ডার না করতাম তবে অপূর্ণতা রয়ে যেত। শেরপুরের মন্ডা প্রকৃতই অনেক মজা। ফারজানা সিফাত লিখেছেন, শেরপুরের মন্ডা সত্যিই মজার। একটু পর পর টুক টুক করে খেয়ে যাচ্ছি। শহরের অনুরাধা মিষ্টান্ন ভান্ডারের মন্ডা ব্যবসায়ী বাপ্পি দে বলেন, আমি নিজে আমাদের মন্ডা আমেরিকা, লন্ডন, কানাডা, দুবাইসহ প্রতিবেশি দেশ ভারতে প্রচুর বিক্রি করছি। আওয়ার শেরপুরের প্রতিষ্ঠাতা দেলোয়ার হোসেন বলেন, পুষ্টি গুণসমৃদ্ধ শেরপুরের বিখ্যাত মন্ডা দেশবাসীর দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে আমরা কাজ শুরু করেছি। গত ২ মাসে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, কুমিল্লায় মন্ডা পৌঁছে দিয়েছি। শেরপুরের মন্ডা খেয়ে শতভাগ ক্রেতাই সন্তুষ্ট। প্রতি কেজি মন্ডাবিক্রি হয় সাড়ে ৬০০ টাকা। শেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরোজ আল মামুন বলেন, শেরপুরের প্রায় সব মিষ্টিই বেশ সুস্বাদু, তবে মন্ডাটা একটু স্পেশাল। আমি শেরপুর এসেই জানতে পারি শেরপুরের মন্ডা দেশ ছেড়ে বিদেশেও যাচ্ছে। এছাড়া আমরাও ঢাকা বা গ্রামের বাড়িতে গেলে মন্ডাসহ শেরপুরের অন্য মিষ্টি কিনে নিয়ে যাই। শেরপুরের মন্ডা ও মিষ্টি অন্য জেলার চেয়ে স্বাদে অতুলনীয় হলেও সে তুলনায় দাম অনেক কম।