ঢাকা ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬ পৌষ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

পদ্মার ডানতীর রক্ষাবাঁধ নির্ধারিত সময়ে শেষ করার দাবি

পদ্মার ডানতীর রক্ষাবাঁধ নির্ধারিত সময়ে শেষ করার দাবি

শরীয়তপুরে পদ্মার ভাঙন পাঁচ দশকেরও বেশি সময় থেকে। ভাঙনে জেলার জাজিরা, নড়িয়া ও ভেদরগঞ্জের কয়েক হাজার পরিবার শুধু গৃহহীনই হয়নি হাজার হাজার একর ফসফঠ জমিসহ পাকাণ্ডকাঁচা স্থাপনা। তবে পদ্মার ভাঙন রোধে ২০১৯ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে নড়িয়া ও ভেদরগঞ্জে স্থায়ী রক্ষা বাঁধ নির্মাণের ফলে ভাঙন থেকে রক্ষা পেয়েছে বিস্তীর্ণ অঞ্চল। তারই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের মে মাসে জাজিরাও ৮৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮.৬৭ কিলোমিটার রক্ষা বাঁধের কাজ শুরু হয়েছে।

জাজিরা উপজেলার বড়কান্দি ইউনিয়নের আমিনুল ইসলাম সেন্টু বলেন, পদ্মার আগ্রাসনে জেলার সবচাইতে বেশি জমি গ্রাস করেছে জাজিরা উপজেলার। কিন্তু সবার পরে স্থায়ী রক্ষা বাধের কাজ শুরু হয়েছে আমাদের উপজেলায়। কাজ শুরু হওয়ার পর চলমান থাকলেও দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সংকটময় অর্থনীতির কারণে এখন সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হওয়া নিয়ে আমরা আশংকায় আছি। বর্তমান সরকারের কাছে দাবি আমাদের সর্বনাশা পদ্মার ভয়াবহ ভাঙন দুর্শশার কথা বিবেচনায় রেখে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করে নড়িয়া ও ভেদরগঞ্জের ন্যায় স্থায়ীভাবে রক্ষার। পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের বাদশাহ মাঝি বলেন, যখন থেকে বুঝতে শিখেছি তখন থেকেই পদ্মার ভাঙনে কাঁচা-পাকা বাড়ি-ঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গাছ-পালা ও ফসলি জমি চোখের সামনে বিলীন হতে দেখেছি। বর্ষা আসলেই রাতের বেলায় আমাদের নির্ঘুম রাত কাটত। চোখের সামনে দেখেছি পদ্মা আর মানুষের টানাটানি। অনেকেই সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। জাজিরার বাঁধের কাজ শুরু হওয়ার পর আমরাও নড়িয়া-ভেদরগঞ্জের ন্যায় আশায় বুক বেধেছি। কিন্তু কাজ শুরু হওয়ার পরই দেশের সার্বিক অবস্থায় এক বিরাট পরিবর্তন আসে। যাতে শুধু সরকার ও প্রশাসনিক কাঠামোরই পরিবর্তন হয়নি অর্থনৈতিক সেক্টরেও আমুল পরিবর্তন এসেছে।

যা বাঁধ সঠিক সময় বাস্তবায়ন নিয়ে আমাদের মধ্যে চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। যদি দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাঁধ বাস্তবায়ন না হয় তাহলে আমরা ঝুকির মধ্যেই থেকে যাব। শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ তারেক হাসান বলেন, ২০২৪ সালের মে মাসে জাজিরা উপজেলার পূর্বনাওডোবা জিরো পয়েন্ট থেকে পাথালিয়া কান্দি পর্যন্ত পদ্মার ভাঙন রোধে ৮৫৯ কোটি ৭৬ লাখ ৮৬ হাজার টাকা ব্যয়ে ৮.৬৭ কিলোমিটার রক্ষা বাঁধের কাজ শুরু করেছি। বাঁধ প্রকল্পের কাজ ২০২৬ সালের জুন মাসের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। আমরা আশা করছি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজের গুণগত মান ঠিক রেখে শেষ করতে পারব। বাধটি বাস্তবায়ন শেষ হলে শুধু জাজিরা নয় পুরো শরীয়তপুরের পদ্মা পাড়ের এই বিস্তীর্ণ জনপদ স্থায়ীভাবে রক্ষা পাবে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে অর্থনৈতিক অবস্থার বিষয়ে আর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় প্রকল্পটি নিম্ন ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত করায় ধারাবাহিকতায় কিছুটা বিঘ্ন ঘটছে। তার পরেও আমরা ভাঙন কবলিতদের দুরাবস্থার কথা মাথায় রেখে সঠিক সময়ের মধ্যেই বাস্তবায়নের লক্ষে কাজ করে যাচ্ছি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত