ঢাকা ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বিনা খরচে আলু সংরক্ষণ করতে পারবেন ১২০০ কৃষক

বিনা খরচে আলু সংরক্ষণ করতে পারবেন ১২০০ কৃষক

বগুড়ায় চাষিরা বিনাখরচে অহিমায়িত ঘরে আলু সংরক্ষণ করতে যাচ্ছে। জানা যায় এ জেলার ১২০০ স্বল্প ও মাঝারি চাষি এবার বিনা খরচে অহিমায়িত ঘরে আলু সংরক্ষণ করতে পারবে। চলতি মৌসুমে বগুড়ার ক্ষুদ্র ও মাঝারি ১২০০ আলু চাষি তাদের উৎপাদিত ১২০০ টন আলু রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। জেলার ৭টি উপজেলায় ৪০টি মডেল ঘরে বস্তা ছাড়াই ওই পরিমাণ আলু সংরক্ষণ করা যাবে। এ সব সংরক্ষণাগারে ৩ থেকে ৪ মাস পর্যন্ত সংরক্ষণকৃত আলু ভাল অবস্থায় থাকে। খরচ ছাড়াই আলু সংরক্ষণ করার সুযোগ পাওয়ায় এবার একদিকে যেমন ক্ষুদ্র ও মাঝারি ১২০০ আলু চাষির আর্থিক সাশ্রয় হবে। অন্যদিকে সংরক্ষণ অভাবে জমি থেকেই স্বল্পমূল্যে আলু বিক্রি করতে হবে না এবং আলুর লভ্যাংশ বেশি পেয়ে অনেকটা উপকৃত হবে। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর বগুড়া জেলা কার্যালয় সূত্রে এ সব তথ্য জানা গেছে। বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলা ইউনিয়নের মাঝবাড়ি গ্রামের আলু চাষি মো. ইব্রাহিম বলেন, সরকারি খরচে মডেল আলু সংরক্ষণাগার নির্মাণ করে দেয়ায় তারা বিনা খরচে আলু সংরক্ষণ করতে পারবে। ফলে ক্ষুদ্র আলু চাষিরা হিমাগারের বিড়ম্বনার হাত থেকে রক্ষা পাবে। প্রায়ই বিভিন্ন স্থান থেকে আলু চাষিরা এ সব মডেল ঘর দেখে যাচ্ছে। তারা বলেন এরকম সংরক্ষণাগার নির্মাণ করলে অন্তত ১২ থেকে ১৫ বছর তাদেরকে আর আলু সংরক্ষণে ভোগান্তি পোহাতে হবে না। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর বগুড়া কার্যালয় সূত্র জানায়, চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি হওয়া, আলু সংরক্ষণে হিমাগারে উচ্চ মূল্য ব্যয় থেকে রক্ষা, বসতবাড়িতে আলু রাখার জায়গার অভাব এবং নগদ অর্থের প্রয়োজনে আলু চাষিরা প্রতিবছর কম দামে আলু বিক্রি করতে বাধ্য হয়। এ অবস্থা উত্তরণের জন্য আলুর উপযুক্ত সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ, বহুমুখী ব্যবহার ও বিপণন ব্যবস্থার উন্নয়ন কর্মসূচি হাতে নেয় সরকার। তারই ধারাবাহিকতায় আলুর বহুমুখী ব্যবহার সংক্ষণ, বিপণন উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে অধিক আলু উৎপাদনকারী ১৬টি জেলায় বসতবাড়িতে স্বল্প খরচে ৪৫০টি অহিমায়িত সংরক্ষণাগার মডেল ঘর নির্মাণ এবং আলু চাষিদের উদ্বুদ্ধকরণ, আলু সংরক্ষণ কৌশল প্রদর্শন ও সম্প্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। উক্ত প্রকল্পের আওতায় গত ২০২৩-২৪ মৌসুমে বগুড়ার ৭টি উপজেলায় ৪০টি মডেল ঘর নির্মাণ করা হয়। বাঁশ, কাঠ, টিন, সিমেন্টের পিলার, কর্কশীট ও অন্যান্য সামগ্রী ব্যবহার করে স্বল্প খরচে নির্মিত এসব মডেল ঘরে ৩০ টন পর্যন্ত আলু সংরক্ষণ করা যাবে। এক্ষেত্রে প্রতিটি মডেল ঘরকেন্দ্রিক ৩০ জন করে স্বল্প ও মাঝারি ধরনের আলু উৎপাদনকারীদের সমন্বয়ে দল গঠন করা হয়েছে। দলের সদস্যরা ঐ মডেল ঘরে আলু বিনা খরচে তাদের আলু সংরক্ষণ করতে পারবে। ফলে এ সব আলু চাষিরা প্রতি বস্তা হিমাগার ভাড়া ৩৮০ টাকা, লোড আনলোড খরচ ১০০ টাকা ও ভ্যান ভাড়াসহ লেবার খরচ ৫০ টাকা অর্থাৎ বস্তা প্রতি প্রায় ৫০০ টাকা ব্যয় থেকে রক্ষা পাবে। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর বগুড়ার কর্মকর্তা মমতা হক বলেন, অধিক আলু উৎপাদনকারী জেলাগুলোতে স্বল্প ও মাঝারি ধরনের আলু উৎপাদনকারী চাষিদের জন্য সরকারি খরচে অহিমায়িত মডেল ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে বগুড়ার ৭টি আলু উৎপাদনকারী উপজেলায় ৪০টি মডেল ঘর নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। তাছাড়া আরো ২৭টি মডেল ঘর নির্মাণ প্রক্রিয়াধিান।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত