বাংলাদেশের পুলিশের এন্টি টেররিজম ইউনিটের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি খোন্দকার রফিকুল ইসলাম বাগেরহাট জেলা ইমাম সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বলেছেন, এত বড় একটা বিপ্লব হলো, কত মানুষ আত্মাহুতি দিল, তারপরও কিছু মানুষের স্বভাব পরিবর্তন হলো না। একটা দুটো ডেডবডি পড়লে একটা সমাজ বদলে যায়। সমাজ একটা ধাক্কা খায়, হাজারের উপরে আমাদের সন্তানদের তাজা প্রাণ ঝরে গেছে।
আমরা বোধহয় সংখ্যাটা সত্যিই ভুলে গেছি। যে জুলুম নির্যাতনের ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন আসছে, এটা কোনো একটা রেজিম পরিবর্তন করার জন্য নয়। সমাজ পরিবর্তন ও বৈষম্যকে পিশে ফেলার জন্য এই আন্দোলন হয়েছে। অমুক আজকে চেয়ারে বসে আছে, উনি চলে যাওয়ার পরে আমি বসব। আগে উনি চেয়ারে বসে অন্যায় করে সুবিধা নিত, এখন আমি সুবিধা নিব। সেটার জন্য এই আন্দোলন হয়নি। অনেকে মনে হয় ভুল ম্যাসেজ নিচ্ছেন, যারা বিভিন্ন অপকর্মে জড়াচ্ছেন, তারা সাবধান হয়ে যান, তওবা করেন।
যারা মনে করছেন দিন বদল হয়ে গেছে, এখন পকেট ভারি করব। জঘন্য চিন্তা, এখনও এসব ভুলে যান বলে হুঁশিয়ারি দেন পুলিশের অন্যতম এই শীর্ষ কর্মকর্তা। তিনি আরো বলেন, এত মূল্য দেয়ার পরেও যদি আমরা সমাজকে পরিবর্তন করতে না পারি। ন্যায়ের দিকে নিষ্ঠার দিকে নিতে না পারি, সকল বৈষম্যকে পায়ের নিচে পদদলিত করে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে না পারি তাহলে ষড়যন্ত্রকারীরা পেয়ে বসবে। এজন্য সবাইকে অন্যায় ও অপরাধের বিরুদ্ধে খোলা ময়দানে কথা বলতে হবে। গতকাল বৈষম্যমুক্ত, শান্তি ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে ইমাম সমাজের ভূমিকা শীর্ষক ইমাম সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন খোন্দকার রফিকুল ইসলাম।
বাগেরহাট কামিল মাদরাসা মাঠে অনুষ্ঠিত ইমাম সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের গভর্নর ড. খলিলুর রহমান মাদানী, তিনি বলেন কলশিত এই সমাজকে শান্তির সমাজে পরিণত করতে ইমামদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে। সমাজ পরিবর্তনের দায়িত্ব আজ ইমামদের কাঁধে নিতে হবে।
মুক্ত স্বাধীন পরিবেশে দায়িত্ব পালনে গাফিলতি করলে পরকালে বিচারের দিনে দায়িত্বে অবহেলার জন্য আমরা যেন বিচারের মুখোমুখি না হই। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাগেরহাটের পুলিশ সুপার তৌহিদুল আরিফ, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এমএ সালাম, বাগেরহাট জেলা জামাতের আমির মাওলানা রেজাউল করিম, নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট শেখ আব্দুল ওয়াদুদ, মাধবকাঠি ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মশিউর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাগেরহাটের সভাপতি হাফেজ মাওলানা মাহফুজুর রহমান, যুব জামায়াত নেতা মনজুরুল হক রাহাত, বাগেরহাট পুরাতন কোর্ট মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা রুহুল আমিন খান। সম্মেলনে জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও পৌরসভার ইমামরা অংশগ্রহণ করেন।