নওগাঁয় আগাম জাতের আলু বাজারে উঠতে শুরু করেছে। অল্প সময় ও কম পরিচর্চায় আগাম জাতের আলু হয়ে থাকে। বাজারে ভালো দাম পেয়ে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে- জেলায় ২১ হাজার ২৭০ হেক্টর জমিত আলুর আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা থেকে ৪ লাখ ৩০০ টন উৎপাদন হবে। তবে আগাম জাতের আলু ৫ হাজার হেক্টর জমিতে রোপণ হয়েছে। যা থেকে ৬০ হাজার টন উৎপাদনের আশা। মৌসুমের শুরুতে আলুর কেজি ছিল ৪০-৪৫ টাকা। বছরের শেষ সময় এসে সর্বোচ্চ ৭২-৭৫ টাকা কেজি পর্যন্ত বিক্রি হয়।
এছাড়া দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের প্রায় ২০টি জেলায় ভয়াবহ বন্যা হয়। এ বন্যার কারণে আলুর চাহিদা বেড়ে যায়। এতে দামও প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায়। আলুর দাম বাড়তি থাকায় কৃষকরাও ভাল দাম পাওয়ার আশায় আগ্রহ নিয়ে আগাম জাতের আলু চাষাবাদ করে। তবে এ বছর আগাম জাতে আলু চাষাবাদে খরচ কিছুটা বেশি পড়েছে। বীজ আলু, সার, কীটনাশক ও শ্রমিক মজুরির দাম বাড়ায় বিঘাপ্রতি খরচ বেড়েছে অন্তত ৫ হাজার টাকা। সে হিসেবে বিঘাতে খরচ পড়েছে অন্তত ৩৫ হাজার টাকা। জেলার বদলগাছী উপজেলার বালুভরা গ্রামের কৃষক মাসুদ রানা বলেন, গত বছর বীজ আলুর কেজি ছিল ৬৫ টাকা। আর এ বছর ৭২-৭৫ টাকা কেজি কিনতে হয়েছে। সে হিসেবে বীজ, সার ও কীটনাশক ও শ্রমিক মিলে বিঘাতে বাড়তি খরচ পড়েছে অতিরিক্ত ৫-৬ হাজার টাকা। আর বিঘাতে খরচ হয়েছে ৩২-৩৫ হাজার টাকা।
যদি ভালো মানের বীজ আলু জেলায় পাওয়া যেত তাহলে খরচ কম হতো এবং কৃষকদের জন্য সুবিধা হতো।সদর উপজেলার কীত্তিপুর গ্রামে কৃষক কাবির হোসেন বলেন, এ বছর ৪ বিঘা জমিতে আগাম জাতের আলুর আবাদ করা হয়েছে। বিঘাতে ফলন হয়েছে ৩৫ মণ হারে। দুই সপ্তাহ আগে ৩ হাজার টাকা মণ হিসেবে দুই বিঘার আলু ২ লক্ষাধিক টাকার বিক্রি করা হয়েছে। আরো দুই বিঘার আলু উঠানো হচ্ছে। তবে দাম কমে গেছে। ব্যবসায়িরা এখন ২২০০ টাকা মণ দাম বলছে। খরচ বাদেও ভালো লাভ থাকবে। তবে আগাম জাতের আলু চাষ লাভজনক।
শেরপুর গ্রামের কৃষক রাজু হোসেন বলেন, আগাম আলু রোপণের জন্য পাশের জেলা বগুড়া থেকে বীজ আলু সংগ্রহ করতে হয়। সেখানে হিমাগারে ভাল মাসের বীজ পাওয়া যায়। ওই বীজ থেকে ভাল আলু পাওয়া যায়। কিন্তু স্থানীয় যে হিমাগার রয়েছে, সেখান থেকে বীজ আলু সংগ্রহ করলে ভালো আলু পাওয়া যায় না। কিন্তু খরচ একই হয়। বিষয়টি কর্তৃপক্ষ দেখলে কৃষকদের জন্য সুবিধা হয়। নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, আলু চাষে কৃষকদের সবধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। সঠিক সময়ে রোপণ ও পরিচর্চায় ভালো ফলন হয়েছে। বর্তমানে ভালো দাম পেয়ে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে।