গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার কড়িহাতা ইউনিয়নের তরুন গ্রামে এক বাক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী কিশোরীকে দুই দিন আটকে রেখে দলবদ্ধ ধষর্ণের অভিযোগে তিনজনের নামে কাপাসিয়া থানায় একটি মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় মূল হোতা স্থানীয় বখাটে সিয়ামকে (১৯) থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে গতকাল গাজীপুর আদালতে পাঠিয়েছে। সে ওই গ্রামের সামসুল হকের ছেলে। মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কড়িহাতা ইউনিয়নের সরসপুর গ্রামের ইতালি প্রবাসী খলিলুল্লাহর স্ত্রী পারভীন আক্তার তার বাড়িতে বয়স্ক নারী পুরুষ ও প্রতিবন্ধী শিশু কিশোরদের আশ্রয়, বরণ পোষণ ও শিক্ষা প্রশিক্ষণের জন্য ছায়া নীড় সেবা কেন্দ্র নামে একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরে পরিচালনা করে আসছেন। সেখানে বর্তমানে ২৭ জন অসহায় নারী পুরুষ অবস্থান করছেন। ওই সেবা কেন্দ্রে গত প্রায় এক বছর আগে ময়মনসিংহ জেলার পনের বছর বয়স্ক এক বাক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী কিশোরী বসবাস করে আসছে। সে মাঝে মধ্যে সেবাকেন্দ্র ও গৃহস্থালির কাজে সহযোগিতা করে থাকে। গত ১২ ডিসেম্বর সন্ধ্যার সময় রান্নাঘরে ভাত রান্নার সময় ওই কিশোরীকে তরুন গ্রামের শামসুল হকের ছেলে সিয়াম (১৯) তাকে ডেকে সেবা কেন্দ্রের বাইরে নিয়ে যায়। সেখানে লুকিয়ে থাকা একই গ্রামের নাজিম উদ্দিনের ছেলে খোকন মিয়া (২৫) ও কামাল হোসেনের ছেলে জাহাঙ্গীরসহ (৩০) তিনজন মিলে তাকে জোর করে তুলে নিয়ে যায়। পরে সিয়ামের বাড়ির সামনে জঙ্গলে একটি পরিত্যক্ত মাটির ঘরে আটকে রেখে ওই কিশোরীকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে প্রথমে সিয়াম তাকে ধর্ষণ করে। পরে পালাক্রমে খোকন মিয়া ও জাহাঙ্গীর হোসেনও তাকে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। পরে ১৪ ডিসেম্বর রাত সাড়ে দশটার দিকে ওই গ্রামের কাজল মিয়ার বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করে সেবা কেন্দ্রে নিয়ে গেলে সে এসব ঘটনা পরিচালক পারভীন আক্তারকে জানায়। পরে পারভীন আক্তার বাদী হয়ে গত বুধবার রাতে তাদের বিরুদ্ধে কাপাসিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। কড়িহাতা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি সদস্য মজিবুর রহমান এবং আওয়ামী লীগ নেতা বিল্লাল হোসেন আপস মীমাংসার আশ্বাস দিয়ে কালক্ষেপণ করে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে এবং আসামিদের পালাতে সহযোগিতা করেছেন বলেও তিনি অভিযোগ করেছেন। তবে মজিবুর রহমান জানান, আগে থেকে এ ঘটনার বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না। গত দুই দিন আগে পারভীন আক্তার সিয়ামকে আটক করলে বিল্লাল হোসেন তাকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যান। এ সময় তিনি পারভীন আক্তারকে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কাপাসিয়া থানার ওসি কামাল হোসেন জানান, ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত প্রধান আসামি সিয়ামকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে, অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আর ধর্ষণের শিকার কিশোরীকে পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।