ভয়াবহ বন্যা-পরবর্তী স্থায়ী জলাবদ্ধতার পানিতে ফলদ ও বনজ বৃক্ষ মরতে শুরু করেছে। প্রায় পাঁচ মাস জলাবদ্ধতার কারণে কৃষি ও মৎস্য খাতে ব্যাপক ক্ষতির পর এখন বিভিন্ন গাছপালা মারা যাওয়ায় এলাকাবাসী চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। কৃষি ও বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জলাবদ্ধতা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় গাছপালা সহজেই মারা যায়।
অতিবৃষ্টি ও নদ নদীর উপচে পড়া পানিতে কেশবপুর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার ১০৪টি গ্রাম প্লাবিত হয়। বন্যার পানি সরতে না পেরে দেখা দেয় ভয়াবহ জলাবদ্ধতা। জলাবদ্ধতায় কৃষি ও মৎস্য অফিস ১২০ কোটি টাকার ক্ষতি নিরুপণ করে।
নদ নদী পলিতে ভরাট হওয়ায় বন্যা ও জলাবদ্ধতার পানি নিস্কাশন না হওয়ায় কৃষকদের নিজ উদ্যোগে সেচ প্রকল্প গ্রহণ করায় দীর্ঘ পাঁচ মাস পর জলাবদ্ধতার পানি সামান্য কমে যাওয়ার পর এখন ব্যাপক গাছপালা মরে যাচ্ছে। আম, কাঁঠাল, বরই, মেহগনি, আমড়া, সজিনাসহ বিভিন্ন গাছপালা মরে যাওয়ায় এলাকাবাসী আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। উপজেলার পাঁজিয়া ইউনিয়নের মাদারডাঙ্গা গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলামের বসতবাড়ির পাশে লাগানো একাধিক আমের চারা জলাবদ্ধতার পানিতে মারা গেছে। ওই সমস্ত গাছে গত বছর আম ধরেছিল। গাছগুলো মারা যাওয়ায় তিনিও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানান। সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের কৃষক কামরুজ্জামান বলেন, তার দেড় বিঘা জমির ৪৩৪টি কুল বরই গাছে ফুল এসেছিল।
ংওই কুল বাগানের দাম হয়েছিল তিন লাখ টাকা। কিন্তু জলাবদ্ধতার কারণে গাছের ফুল ঝরে অধিকাংশ গাছ মরে যাচ্ছে। এতে তিনি প্রায় পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। মধ্যকুল গ্রামের আব্দুল কাদের বলেন, ভয়াবহ জলাবদ্ধতার কারণে তাদের বাগানের মেহগনি, সুপারির চারাসহ বিভিন্ন গাছপালা মরে গেছে। উপজেলার আটন্ডা গ্রামের কৃষক রাজু আহমেদ বলেন, তাদের বাড়ির পাশের সড়কের বড় বড় কাঁঠাল গাছ মরে যাচ্ছে।
গ্রামীণ সড়কের পাশের অসংখ্য সজিনা গাছ মরে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এলাকার মানুষ। এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মহাদেব চন্দ্র সানা বলেন, জলাবদ্ধতা দীর্ঘস্থায়ী হলে কম বয়সী গাছপালা মারা যায়। এ বছর যশোর অঞ্চলে জলাবদ্ধতা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।