ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় একটি সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। জেলা শহর থেকে পঞ্চাশ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একমাত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে বন্ধ রয়েছে অ্যাম্বুলেন্স সেবা। একমাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ অ্যাম্বুলেন্স। এতে চরম দুর্ভোগে পড়ছেন সাধারণ রোগীরা। ড্রাইভার না থাকায় অ্যাম্বুল্যান্সটি সেবা বন্ধ দীর্ঘদিন ধরে। চালকের বিরোদ্ধে বাড়তি ভাড়াসহ নানান অভিযোগে মানববন্ধন করেছিল এলাকাবাসী। এই ঘটনার পর চালককে বদলি করা হয়েছিল। কিন্তু নতুন চালক কেউ আসেনি। গাড়ি চালক না থাকায় অ্যাম্বুলেন্স সেবা পাচ্ছেন না রোগীরা। এমনিতে নানান সমস্যায় জর্জরিত স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের সেবা চলে জোড়াতালি দিয়ে। তার উপর অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে হতাশ রোগীরা। সামান্য গুরত্বর রোগী হলেই ময়মনসিংহ মেডিকেলে রেফার করা হয়। অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে চরম ক্ষুব্ধ মানুষ। হাসপাতালে সেবা নিতে আসা আব্দুর রহিম বলেন, সামান্য অসুখেই ময়মনসিংহ রেফার করা হয়েছে, এখন অ্যাম্বুলেন্স পাচ্ছি না। এছাড়াও ধোবাউড়া হাসপাতালে জনবল সংকটে ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা। হাসপাতালটিতে রয়েছে ওষুধ সংকটও। ৫০ শয্যার নতুন হাসপাতালটি উদ্বোধন এর ১২ বছরেও সেবা কার্যক্রম এখনো চালু হয়নি। ৫০ শয্যার জন্য ২ তলা বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ হলেও জনবল কাঠামো অনুমোদন না হওয়ায় চালু হচ্ছে না ৫০ শয্যার কার্যক্রম। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ মোট চিকিৎসকের পদ রয়েছে ২৮টি। এর মধ্যে আছেন ১৫ জন। তাদের মধ্যে অন্য হাসপাতালের দুইজন চিকিৎসক সংযুক্ত হয়ে কাজ করছেন। সিনিয়র স্টাফ নার্সের মধ্যে প্রয়োজনীয় পুরুষ নার্স কম থাকায় জরুরি সেবায় বিঘ্ন ঘটে। রয়েছে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর ১৭ জনের মাঝে ৫ জন। ৫০ শয্যার ধোবাউড়া হাসপাতালে প্রতিদিনি তিন শতাধিক মানুষ চিকিৎসা নিতে আসেন।
এর মধ্যে প্রতিদিন গড়ে ৫ থেকে ১০ জন রোগী এই হাসপাতালে ভর্তি হন। প্রয়োজনীয় মেডিকেল অফিসার ও তাৎক্ষণিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় যথাযথ চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হন সাধারণ মানুষ। এছাড়া চক্ষু বিশেষজ্ঞের পদটিও দীর্ঘদিন ধরে শূন্য থাকায় এখানে চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ মানুষ হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। এই হাসপাতালের প্যাথলজিতে নেই আধুনিক কোনো যন্ত্রপাতি। বেশির ভাগ পরীক্ষা-নিরীক্ষা বাইরের ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে করাতে হয়। এতে সরকারি ধার্যকৃত টাকার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি টাকা গুনতে হয় রোগীদের। দ্রুত সমস্যার সমাধান করে রোগীদের সব সেবা প্রদানের দাবি জানিয়েছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। এ ব্যাপারে ধোবাউড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) নাহিদা নাজনীন নিপা বলেন, আপাতত স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার গাড়ি চালক মাঝে মাঝে অ্যাম্বুলেন্স সেবা দিচ্ছেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।