সারাদেশের মতো ভোলাতেও বইছে শীতের তীব্রতা। তাই শীত বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে শীতবস্ত্রের দিকে ছুটছেন ক্রেতারা। কম দামে শীতবস্ত্র কেনার ক্ষেত্রে মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন ঝুঁকছেন ফুটপাত কিংবা অস্থায়ীভাবে গড়ে তোলা শীতবস্ত্রের দোকানগুলোর দিকে। তারা হালকার চেয়ে ভারী শীতবস্ত্র কেনার দিকেই বেশি মনোনিবেশ করছেন। শীত বাড়ার সাথে সাথেই জমে উঠেবে ভোলার শীতবস্ত্রের বাজার। ফুটপাত কিংবা অস্থায়ীভাবে গড়ে তোলা শীতবস্ত্রের এসব দোকানগুলোতে ভিড় করছেন নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। উদ্দেশ্য একটাই কম দামে ভালো মানের পোষক কেনা। যদিও কাপড়গুলো পুরাতন, তবে দেখে পুরাতন মনে হয় না। তাই ভিড় ঠেলে পছন্দের পোশাক কিনতে ব্যস্ত ক্রেতারা। প্রায় ৩০ বছর আগের হকারদের হাত ধরে শুরু হয় পুরাতন কাপড় বিক্রির এই মার্কেটের। প্রত্যেক বছরের নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এখানে চলে শীতবস্ত্র বেচা-কেনা। ভোলা পৌরসভার নতুন বাজার এলাকায় শীতের পোশাক সাজিয়ে বসেছেন প্রায় এখানে ২৫টির মতো দোকান রয়েছে। কয়েকদিন শীত পড়ায় পোশাক কিনতে ভিড় জমাচ্ছে ক্রেতারা। প্রতিদিন এ সব দোকানে ভিড় লেগেই থাকছে। কোন দোকানে একদামে আবার কোথাও দামাদামি করে চলছে বিক্রি। বলছিলাম ভোলা শহরের নতুন বাজার টাউন হলের সামনে পুরাতন জামা কাপড়ের গাউন হকার মার্কেটের কথা। শীত আসলেই ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে আসে এসব পুরনো কাপরের গাইড। মূলত শীত যতদিন থাকে ততদিন এ ব্যবসার সাথে যুক্ত থাকেন ব্যবসায়ীরা। এই গাইডগুলোর মধ্যে শিশু ও বড়দের পোশাক সুয়েটার, গরম কাপর, কম্বলসহ বিভিন্ন ধরনের কাপড় থাকে। মূলত নিন্মণ্ডআয়ের মানুষদের টার্গেট করে এসব কাপড় এখানে বিক্রি হয়। শীতের উপর নির্ভরশীল এ ব্যবসা, শীত যত বেশি হবে ব্যবসাও হবে জমজমাট। গত কয়েক বছর ধরে ঠান্ডার প্রকোপ ছিল অনেক কম। এ কারণে লোকসানে পড়তে হয়েছিল ব্যবসায়ীদের। তবে এবার ভালো ব্যবসার আশাবাদ ব্যবসায়ীদের। চাকরিজীবী ফেরদৌস বলেন, আমি এই মার্কেটে কয়েকবার এসেছি, এখানে অনেক চয়েজফুল জামাকাপড় পাওয়া যায়। এগুলো সব বাহিরের ১৫০ টাকার একটি সোয়েটার যদি ধোলায়ের পর আয়রন করার হয় তা হলে কেউ বলবে পারবে না এটা আমি এই পুরাতন মার্কেট থেকে কিনেছি। মনে হবে এটা আমি ১ হাজার ২০০ টাকা দিয়ে কিনেছি। ভোলা সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের বোরাক চালক মো. লিটন বলেন, ২৫০ টাকায় একটি জ্যাকেট কিনেছি, ছোট মেয়ের জন্য ৫টা শীতের সোয়েটার কিনেছি ৩২০ টাকায়। এই মার্কেটে কম দামে শীতের পোশাক পাওয়া। নতুন বাজারের গাউন হকার মার্কেটের বিক্রেতা মো. ইয়াছিন বলেন, এখানে খুব সীমিত দামে বিক্রি করি। শীত একটু কম হওয়ায় বেচা-বিক্রি কম। গত বছর ভালোই ছিল, এবার আশাকরি শীত পরলে ভালো বেচা-কেনা হবে ইনশাআল্লাহ। বিক্রেতা আল-আমীন বলেন, বর্তমানে বেচাকেনা ভালো যাচ্ছে না, শীত বাড়লে বেচা-কেনা বাড়বে। বর্তমানে শীত কম, তাই আমাদের বেচা-কেনাও কম। আমরা মূলত ব্যবসা করি ৪ মাস। তার মধ্যে ব্যবসা হয় ২ মাস। আর এই দুইমাসের ইনকাম দিয়ে বাকি ৮ মাস চলতে হয় আমাদের। শুধু ভোলা পৌরসভার টাউন হলের সামনে নয়, ছোট-বড় অসংখ্য দোকান রয়েছে শহরের সদর রোডের জিয়া মার্কেটের সামনে, কে জাহান মার্কেটের সামনে, কর্ণফুলী কমপ্লেক্স এর সামনে। এছাড়া ভোলা শহর নয় এমন অনেক ভ্রাম্যমাণ দোকান রয়েছে ভোলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে এবং বড় বড় বাজারগুলোতে। সেখান থেকে কম দামে সাধ্যের মধ্যে শীত নিবারণের জন্য গরম কাপড় ক্রয় করছেন নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্তসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।