ঢাকা ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২০ পৌষ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

স্কোয়াশ চাষে লাভবান কৃষক

স্কোয়াশ চাষে লাভবান কৃষক

হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার ভুলকোট গ্রামে হলুদ ও সবুজ রঙের স্কোয়াশ চাষ করে লাভবান কৃষক মো. সানু মিয়া। সড়কের পাশ দিয়ে যাতায়াতকালে তাকালেই নজর আটকে যাবে। মাত্র ৮ শতক জমিতে সবুজ ও হলুদ রঙের স্কোয়াশের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষক মো. সানু মিয়া স্কোয়াশের চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামীমুল হক শামীমের পরামর্শ নিয়ে চলতি বছর তিনি এ সবজি চাষ করেন। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সিলেট অঞ্চলে কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রযুক্তি গ্রামের সবজি উৎপাদন কর্মসূচির আওতায় স্কোয়াশ চাষে তার ব্যয় হয়েছে প্রায় ৪ হাজার টাকা। এখানে ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা বিক্রি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। মো. সানু মিয়া বলেন, ৪ বছর পূর্বে জমিতে প্রথমে সবুজ রঙের স্কোয়াশ চাষ করে লাভবান হয়েছিলাম। তাই চলতি মৌসুমেও দুই রঙের স্কোয়াশ চাষ করেছি। ফলন ভালো দেখে এলাকার অন্য কৃষকরা এই সবজি চাষে আগ্রহী হয়েছেন। খেত ভরা স্কোয়াশ দেখলে মনটা আনন্দে ভরে ওঠে। মালচিং পদ্ধতিতে পোকা দমনে ব্যবহার করা হয়েছে হলুদ ও ফেরোমন ফাঁদ। এরই মধ্যে বিক্রি শুরু হয়েছে। প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি করা যাচ্ছে। ক্রেতারা আগ্রহের সাথে ক্রয় করে নিচ্ছেন। অক্টোবর মাসে চারা রোপণ করা হয়। চারা লাগানো থেকে শুরু করে স্কোয়াশ সংগ্রহ পর্যন্ত জমি সবসময় আগাছামুক্ত রাখতে হবে। পরাগায়নের ১০-১৫ দিনের মধ্যে স্কোয়াশ সংগ্রহ করতে হয়। তখনো স্কোয়াশ সবুজ রঙ থাকবে এবং মসৃণ ও উজ্জ্বল দেখাবে। আর হলুদ রঙেরটা শুরু থেকেই হলুদ হয়। নখ দিয়ে স্কোয়াশের গায়ে চাপ দিলে নখ সহজেই ভেতরে ঢুকে যাবে। সানু মিয়ার ছেলে জসিম উদ্দিন বলেন, বাম্পার ফলন দেখে এলাকার অন্য কৃষকরা স্কোয়াশ চাষে আগ্রহী হয়েছেন। খেত ভরা স্কোয়াশ দেখলে মনটা আনন্দে ভরে ওঠে। স্কোয়াশ বিক্রি শুরু হয়েছে। ক্রেতা সুমন মিয়া বলেন, স্কোয়াশ খেতে সুস্বাদু। পুষ্টিভরা এ স্কোয়াশের চাষ হবিগঞ্জ জেলায় কম। তবে বাহুবলের ভুলকোটে কৃষক মো. সানু মিয়া চাষ করছেন। তার কাছ থেকে লোকজন স্কোয়াশ কিনে নিচ্ছেন।

এ সবজির চাষ বাড়ালে কম দামে পাওয়া যাবে। উপজেলার দ্বিমুড়া কৃষি ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামীমুল হক শামীম বলেন, স্কোয়াশ একটি সুস্বাদু ও জনপ্রিয় সবজি হিসেবে বিদেশিদের কাছে অনেক আগে থেকেই পরিচিত। বর্তমানে দেশে স্কোয়াশ একটি উচ্চমূল্যের ফসল। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে স্কোয়াশের চাষাবাদ বাড়ছে। তুলনামূলকভাবে কম উর্বর জমি এবং চরাঞ্চলে স্কোয়াশের চাষাবাদ সম্প্রসারিত হচ্ছে। এখানে কৃষক মো. সানু মিয়াকে পরামর্শ দিয়েছিলাম। তিনি জমি আবাদ করে স্কোয়াশের চাষ করে লাভবান। তার ন্যায় এলাকার অন্য কৃষকরাও স্কোয়াশ চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠেছেন। তিনি বলেন, স্কোয়াশ দ্রুত বর্ধনশীল।

সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার স্কোয়াশ সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করা যায়। স্কোয়াশের পাইকারি দাম ৫০ থেকে ৭০ টাকা কেজি। তবে এটি খুচরা ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। স্কোয়াশ সাধারণ কুমড়ার মতো সবজি হিসেবে ব্যবহৃত হলেও এর খাদ্য ও পুষ্টিগুণ কুমড়ার চেয়ে অনেক বেশি। এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। বিশেষ করে ডায়াবেটিস, ক্যান্সার ও হার্টের রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। তিনি আরো বলেন- স্কোয়াশে একই সঙ্গে রয়েছে ভিটামিন এ সি ই ও ভিটামিন বি-৬ এবং নায়াসিন, থায়ামিন, প্যানথোটোমিন এসিড ও ফলনিড। এছাড়া স্কোয়াশ ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, খনিজ, ম্যাঙ্গানিজ, কপার, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ক্যারোটিনয়েড এবং অন্যান্য অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদানে ভরপুর। নিয়মিত স্কোয়াশ খেলে ফ্রি রেডিকেলসের হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করা সম্ভব।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত