ঢাকা ০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ২১ পৌষ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কমলা ও মাল্টা চাষে সাত বন্ধুর সাফল্য

কমলা ও মাল্টা চাষে সাত বন্ধুর সাফল্য

দনাজপুরের চেহেলগাজী ইউনিয়নের সালমাবাদ এলাকায় সাত বন্ধু পরিত্যক্ত জমিতে কমলা, মাল্টা, পেয়ারা, লেবু, কুলসহ বিভিন্ন ফলের চাষ করে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তাদের এই উদ্যোগ স্থানীয় কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও নিরাপদ খাদ্য সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। তারা সাত বন্ধু ভিন্ন ভিন্ন পেশায় জড়িত। কিন্তু কৃষির প্রতি তাদের ভালোবাসা ও আগ্রহ একে অন্যকে একত্রিত করেছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন একজন ব্যাংক কর্মকর্তা, একজন প্রকৌশলী, দুজন কৃষিবিদ ও তিনজন ব্যবসায়ী। তাদের পেশাগত ভিন্নতা সত্ত্বেও তারা একসঙ্গে একটি কৃষি প্রকল্প শুরু করেছেন, যার নাম দিয়েছেন ‘কৃষজ’। ১৭ একর জমিতে তারা ২০২২ সালে শুরু করেন এই প্রকল্প। আগে এই জমিতে প্রায় ১০০ বছর ধরে আমবাগান ছিল। কিন্তু সাত বন্ধু ওই জমিতে আমগাছের মাঝখানে ও পাশের পরিত্যক্ত জমিতে কমলা, মাল্টা, পেয়ারা, লেবু, বরইসহ বিভিন্ন ফলের চারা রোপণ করেন। এই প্রকল্পের লক্ষ্য ছিল দেশের মানুষের কাছে কীটনাশকমুক্ত, অর্গানিক ফল ও শাকসবজি পৌঁছে দেয়া। তারা চেয়েছিলেন এমন কিছু তৈরি করতে, যাতে সাধারণ মানুষ নিরাপদ খাদ্য খেতে পারেন। এই প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, আমরা এই প্রকল্পটি শুরু করেছি যাতে নিরাপদ ফল ও শাকসবজি উৎপাদন করতে পারি, যা দেশে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।

গত বছর থেকে এই বাগানের বিভিন্ন মাল্টা, কমলা, পেয়ারা, লেবু, বরইগাছগুলোতে ফল আসতে শুরু করেছে। এছাড়া ফুলকপি, বাঁধাকপি, আলু, শিম, বেগুনসহ বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি উৎপাদিত হচ্ছে। উদ্যোক্তা মুসাভী রেজা অভি বলেন, ‘আমরা শুরুতেই নানা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিলাম। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রকল্পটি সফলতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা কৃষিবিদ বন্ধুদের পরামর্শে ওই ফল ও শাকসবজি চাষ করতে সক্ষম হয়েছি। এই প্রকল্পের প্রসারে সাত বন্ধু এরই মধ্যে বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছেন। মোহাম্মদ আলী জানান, তারা এই প্রকল্প থেকে উপার্জিত অর্থ দিয়ে এটি আরো সম্প্রসারিত করছেন। বর্তমানে দেশি ও বিদেশি ফলের গাছ রোপণ করা হচ্ছে। তাদের লক্ষ্য হচ্ছে ভবিষ্যতে প্রকল্পটির আকার বড় করা এবং নিরাপদ ও অর্গানিক খাদ্য সরবরাহ করা। দিনাজপুর সদর কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান এই প্রকল্পের প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন- দিনাজপুরের সালমাবাদ এলাকায় সাত বন্ধু যে কৃষি প্রকল্প গ্রহণ করেছেন, তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। তাদের উৎপাদিত ফল ও শাকসবজি প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে। অনেকেই তাদের দেখার পর নিজেরাও উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত