ঢাকা ০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ২১ পৌষ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নিহত তিন শ্রমিকের বাড়িতে শোকের মাতম

গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নিহত তিন শ্রমিকের বাড়িতে শোকের মাতম

সিলেটের হবিগঞ্জের বাহুবলে আকিজ ভেঞ্চারের কারখানায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নিহতদে বাড়ির ৩টি স্থানে ৩ শ্রমিকের স্বজদের চাঁদপুরের বাড়িতে শোকের মাতম বইছে। এ ৩জন সম্পর্কে তারা একে অপরের আত্মীয়-স্বজন। স্বজনদের হারানোর বেদনায় শোকে কাতর হয়ে পড়েছে ৩টি স্থানের পুরো পরিবারের সদস্যরা। নিহতরা হলেন- চাঁদপুর সদর উপজেলার মৈশাদী ইউনিয়নের মো. ইব্রাহীম, তার ভাগিনা মো. মিজান ও ফরিদগঞ্জ বালিথুবা ইউনিয়নের মো. মাহফুজ।

হবিগঞ্জের বাহু বলে আকিজ ডেঞ্জারের কারখানায় প্রায় ৩০ বছরের উপরে শ্রমিকের কাজ করতেন ইব্রাহিম খান। বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেছিলেন স্বপ্ন ছিল শেষ বয়সে অবসর সময় পার করবেন সেখানে। স্বপ্ন অধরা রেখে তিনি পাড়ি জমিয়েছেন পরপারে। কারখানার গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে নিহত হন তিনি। শুধু তিনি নন, এ ঘটনায় নিহত হয়েছে তার আরো দুই নিকটাত্মীয়। তারা হলেন- মোহাম্মদ মিজান ও মাহফুজ।

এছাড়া আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছে তার বড় ছেলে মোহাম্মদ আল আমিন। সংসারের চাহিদা মেটাতে এদের সবাইকে কাজে নিয়েছিলেন তিনি। আকিজ ভেঞ্জারের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় পরিবারগুলোর বন্ধ হয়ে গেছে উপার্জনের একমাত্র পথ। তিনজনের মৃত্যু সংবাদে বাকরুদ্ধ তারা।

কোম্পানি এবং সরকারের কাছে সহায়তার দাবি তাদের পরিবারের। গতকালনিহত ইব্রাহিম খানের স্ত্রী রুবি বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, পরিবারটা যার মাধ্যমে চলে, তিনি এখন নেই। সংসার দেখার মতো আর কেউ নেই। আমার ছেলেদের একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দিলে সংসারটা ভাল চলবে। নিহতের ভাতিজা কাউছার হোসেন বলেন, একই পরিবারের তিন জন মারা গেছে। দুজন আহত হয়ে চিকিৎসাধীন।

একজন সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও আরেকজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। তারাই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিল। ইব্রাহীম কাকা দুই বছর ধরে একটি ভবনের কাজ ধরেছে। দুই মাস আগেও এনজিও থেকে তিন লাখ টাকা ঋণ নেয়।

এখন তার এক ছেলে গুরুতর আহত। কোম্পানি ও সরকার যদি সহায়তা না করে, তাহলে সবার সংসারগুলোর পরিস্থিতি করুন হয়ে যাবে, তারা বাঁচার জন্য অনেক কঠিন হয়ে পড়বে। চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাখাওয়াত জামিল সৈকত বলেন, আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবারগুলোর খোঁজখবর নেয়ার চেষ্টা করছি।

উপজেলার পক্ষ থেকে পরিবারগুলোকে যতটুকু সম্ভব সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়া হবে। তাদের পরিবারের সব সময় খোঁজখবর রাখা হচ্ছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত