ঢাকা ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩ পৌষ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সমলয় পদ্ধতিতে বোরো আবাদে খরচ কম

সমলয় পদ্ধতিতে বোরো আবাদে খরচ কম

কম খরচে উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় জেলার সদর উপজেলায় সমলয় পদ্ধতিতে ৫০ একর জমিতে ৯২ জন কৃষক উচ্চফলশীল জাতের ব্রিধান-৯২ আবাদ করছেন। সমলয় পদ্ধতিতে একই সময়ে উন্নত পদ্ধতিতে ধানের চারা উৎপাদন, যন্ত্রের সাহায্যে রোপণ ও কর্তন করা যায় বলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিতেও কম পড়ে। এছাড়া নির্দিষ্ট দূরত্বে রোপণ করায় পেকামাকড়ের আক্রমণ কম হয় এবং সুষম খাদ্য পেয়ে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ বেশি ফলন পাওয়া যায় বলেও জানায় কৃষি বিভাগ। সমলয় পদ্ধতিতে ধান আবাদ করলে বিঘাপ্রতি খরচ প্রায় ৭ হাজার টাকা সাশ্রয় হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর শরীয়তপুর সদরের ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় শরীয়তপুর পৌরসভার দক্ষিণ আটং গ্রামে গতকাল রোববার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুহুল আমিনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর শরীয়তপুরের উপ-পরিচালক মোস্তফা কামাল হোসেন ও সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি নাফিস এলাহী। এসময় সদর উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণসহ শতাধিক কৃষান-কৃষানি উপস্থিত ছিলেন। দক্ষিণ আটং গ্রামের কৃষক বেলায়েত হোসেন বলেন, ধান লাগানো ও কাটার সময় আমাদের এই অঞ্চলে ব্যাপক শ্রমিক সংকট দেখা দেয়। তাই কৃষি বিভাগের পরামর্শে আমরা ৯২ জন কৃষক একত্রিত হয়ে সমলয় পদ্ধতিতে ব্রিধান-৯২ আবাদ করছি। একই সাথে চারা উৎপাদন, যন্ত্রের সাহায্যে রোপণ ও কর্তন করতে পারলে শ্রমিক সংকট কমবে দুর্যোগের ঝুঁকি থেকেও অনেকটা রেহাই পাওয়া যাবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অলি হালদার বলেন, সময়, শ্রম ও খরচ কমিয়ে উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় সমলয় পদ্ধতিতে ধান আবাদের মাধ্যমে কৃষককে অধিক লাভবান করতে আমাদের এই কার্যক্রম। কৃষি বিভাগ কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে প্রণোদনার মাধ্যমে প্রদর্শনী বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ধান কাটার সময়ও কম্বাইন্ড হারভেস্টারের মাধ্যমে জমির ধান কাটা, মাড়াই, ঝাড়াই ও বস্তাবন্দিও যান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় করা হবে। এর মাধ্যমে আশপাশের কৃষকরাও আগামীতে সমলয় পদ্ধতিতে আবাদ করে লাভবান হবেন বলে আমরা আশা করছি। উপ-পরিচালক মোস্তফা কামাল হোসেন বলেন, কৃষিকে লাভজনক করতে কৃষি মন্ত্রণালয় ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কাজ করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় সমলয় পদ্ধতি সম্প্রসারণ করতে প্রণোদানা কর্মসূচির মাধ্যমে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। সমলয় পদ্ধতিতে একই সাথে ট্রেতে চারা উৎপাদানের কারনে জাতের কোন তারতম্য হয়না। এতে করে রোগবালাই দমন অত্যন্ত সহজতর হয়। যান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় রোপণের ফলে নির্দিষ্ট দূরত্বের কারনে সুষম খাদ্য পেয়ে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ ফলন বেশি দেয়। যন্ত্র ব্যবহারের ফলে রোপণ ও কর্তনের সময়ে অনেকাংশেই শ্রমিক সংকট দূর করে। যে কারণে সার্বিকভাবে কমবে উৎপাদন ব্যয় ও ঘাটতি। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন বলেন, দেশের কৃষি উৎপাদন ঘাটতি কমাতে আধুনিক পদ্ধতি ও যান্ত্রিক পদ্ধতির কোনো বিকল্প নেই। সমলয় পদ্ধতি উৎপাদন বৃদ্ধি ও ব্যয় কমানোর জন্য হতে পারে এক মাইলফলক। আমরা সকলে মিলে আন্তরিকভাবে কাজ করলে আগামীর বাংলাদেশ হবে কৃষি স্বনির্ভর।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত