ফুলকপির উৎপাদন খরচ ১৫ টাকা, বিক্রি ৫
প্রকাশ : ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
গত বছরগুলোতে সাটুরিয়ায় ফুলকপি বিক্রি করে বেশ লাভ পেয়েছিলেন কৃষক। সে আশায় চলতি মৌসুমে অধিক জমিতে কপি আবাদ করেছিল তারা। শীতের শুরুতে ভালো দামও পেয়েছেন। প্রতি পিস বিক্রি করেছিল ৪০-৬০ টাকা পর্যন্ত। এখন ফুলকপির ভরা মৌসুম উৎপাদনও বেড়েছে। তবে চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি হওয়ায় দাম কমেছে। পাইকারি চাহিদার অতিরিক্ত কপি কিনছেন না। সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় প্রতি পিস কপির দাম দিচ্ছেন ৫-৬ টাকা। অথচ প্রতি পিস উৎপাদন ও বাজারজাত করতে কৃষকের খরচ হয়েছে ১৫ টাকার বেশি। অনেকে বিক্রিও করতে পারছেন না শীতকালীন এ সবজি। এ জন্য কেটে খেতেই ফেলে রাখছেন। কিছু কপি গরুকেও খাওয়াচ্ছেন। উপজেলা কৃষি অফিস বলছে চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি হওয়ায় দাম কমে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সাটুরিয়া উপজেলা উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক জানায়, চলতি রবি মৌসুমে উপজেলায় ২৪৯ হেক্টর জমিতে ফুল কপি ও ৫৫ হেক্টর জমিতে বাঁধাকপির আবাদ করেছিল কৃষকরা। চাষিদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, প্রতি বিঘা জমিতে ১২ হাজার টাকার চারা লাগে। হালচাষে খরচ হয় ৩ হাজার টাকা। এছাড়া শ্রমিকের মজুরি সার কীটনাশকসহ অন্যান্য খরচ ১৮ হাজার ৭০০ টাকা। জমির মালিককে বছরে ২০ হাজার টাকা দিতে হয়। এভাবে প্রতি বিঘা জমিতে ফুলকপি চাষে ৩০-৩৫ হাজার টাকার বেশি খরচ হয়। প্রতি পিস চারা ৩ টাকা দিয়ে কিনে দুই মাসের বেশি সময় পরিচর্যা করে খরচ পড়ে ১০ টাকার ওপরে। জমি থেকে উত্তোলন করে বাজারে নিতে পরিবহন খরচসহ আরো ৫ টাকা ব্যয় হিসেবে প্রতি কপিতে খরচ ১৫ টাকা। আর এখন কপি বিক্রি করতে হচ্ছে ৫ টাকা। সাটুরিয়া উপজেলার আইরমারা গ্রামে কৃষক বশির আহমেদ গত বছরগুলোয় কপি বিক্রি করে বেশ লাভবান হয়েছেন। এ বছর তিনি ১৮ বিঘা জমিতে আবাদ করেছেন। এরই মধ্যে ১০ বিঘা জমির আগাম কপি বিক্রি করে প্রায় ১৫ লাখ টাকা পেয়েছেন। বাকি আট বিঘা জমির কপি খেতেই নষ্ট হচ্ছে। বিক্রি করতে পারছেন না। এখন খেত পরিষ্কার করতে ওইসব কপি কেটে ফেলে রাখছেন। কিছু গরুকে খাওয়াচ্ছেন। উপজেলার চামারখাই এলাকার বাবু মাস্টার জানায়, ফুলকপির ১ লক্ষ চারা রোপন করেছিলেন তিনি। ৪০ হাজার কপি বিক্রি করার পর দাম না পাওয়াতে খেতে ফেলে রেখেছেন তিনি। তার মতো তার গ্রামের সব কপি চাষিদের অবস্থা একই। সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি হওয়ায় চরম দাম কমে গেছে কপির। আগাম বিক্রি করে লাভবান হলেও বর্তমানে লোকসান হয়েছে কপি চাষিদের। বিষয়টি আমরা কৃষি অধিদপ্তরে জানিয়েছি যদি সেখান থেকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কোনো সহযোগিতা করা যায় তবে করবো।