ঢাকা ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২৪ পৌষ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মঠবাড়িয়ায় এক বছরে ২২ জনের আত্মহত্যা

মঠবাড়িয়ায় এক বছরে ২২ জনের আত্মহত্যা

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় গত এক বছরে ২২ জন নারী-পুরুষের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। কেউ গলায় ফাঁস লাগিয়ে, আবার কেউ বিষপান ও কেউ পোকা নিধনের ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এর মধ্যে অধিকাংশই যুবক-যুবতী। যাদের বয়স ২৫ এর নিচে। আত্মহত্যার আসল রহস্য জানা না গেলেও একাধিক সূত্রে জানাগেছে, কেউ প্রেমে ব্যর্থ হয়ে, দাম্পত্য কলহের জের ধরে আবার অনেকে মানসিকভাবে হতাশাগ্রস্ত হয়ে এ আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। মঠবাড়িয়া থানা সূত্রে জানাগেছে, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ২২ জন নারী-পুরুষ আত্মহত্যা করেছেন। এর মধ্যে ৬ জানুয়ারি বসতঘরে রাখা কীটনাশক পানে আত্মহত্যা করেন উপজেলার বড় মাছুয়া গ্রামের কবির হোসেনের মেয়ে মিম আক্তার (২৪), ১৪ ফেব্রুয়ারি গলায় ফাঁস লাগিয়ে মানিকখালী গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে বৃদ্ধ সাইফুল ইসলাম (৭২), ১৬ ফেব্রুয়ারি একই ভাবে আত্মহত্যা করেন পৌরসভার মিরুখালী রোডের মোস্তফা কামালের ভাড়াটিয়া ছিদ্দিকুর রহমানের পুত্র রনি (১৬), ২ মার্চ গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন উপজেলার ধানীসাফা গ্রামের মামুন হোসেন হাওলাদারের ছেলে আল মাহমুদ হাওলাদার (২১), এছাড়া ২৮ মার্চ কীটনাশক পানে ভেচকী গ্রামের মৃত শাহজাহান হাওলাদারের মেয়ে শাহিনুর বেগম সুরাইয়া (৪৩), ২০ এপ্রিল নিজের গায়ের ওড়না পেঁচিয়ে বকসির ঘটিচোরা গ্রামের বাদল মিয়ার ১৩ বছরের মেয়ে শারমিন, ৩০ মে কীটনাশক পানে উপজেলার আঙ্গুলকাটা গ্রামের আইয়ূব মাতুব্বরের ১১ বছর বয়সী কন্যা সুমাইয়া শিমু, ১ জুন সন্ধ্যায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে বকসির ঘটিচোরা গ্রামের ওমর আলীর পুত্র আশরাফুল ইসলাম, ৭ জুন সন্ধ্যায় বিষপানে উপজেলার খেতাছিড়া গ্রামের লিটন শরীফের কন্যা ফাতিমা (১৫), ১০ জুন চাউলের পোকা নিধনের ট্যাবলেট খেয়ে তালতলা গ্রামের আ. মজিদ ফরাজীর ছেলে আলমগীর ফরাজী (৩৫), ১৭ জুন গলায় ফাঁস লাগিয়ে ছোট মাছুয়া গ্রামের মৃত সুলতান আকনের ছেলে সোহেল আকন (৩৫), একই ভাবে ২২ জুন বিকেলে শহরের কলেজপাড়া এলাকার মোস্তফা ফরাজীর ১৬ বছর বয়সী কন্যা মাহমুদা আক্তার মৌ, ২৫ জুলাই দক্ষিণ মিঠাখালী গ্রামের আলম বেপারীর পুত্র রাকিব বেপারী (১৮), ১৬ সেপ্টেম্বর দেবত্র গ্রামের জলিল হোসেন এর ১৩ বছর বয়সী কন্যা জান্নাতী আক্তার, ১ অক্টোবর রাতে চাউলের পোকা নিধনের ট্যাবলেট খেয়ে বকসির ঘটিচোরা গ্রামের পান্না হাওলাদারের কন্যা মোসা. কুলসুম বিবি (২৬), কীটনাশক পানে ৮ অক্টোবর খেতাছিড়া গ্রামের বাবুল ফরাজীর স্ত্রী সাথী আক্তার (২৫), ২৪ অক্টোবর রাতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আন্ধারমানিক গ্রামের আলমগীর সরদারের ১৭ বছর বয়সী পুত্র মো. সাব্বির সরদার, ১ নভেম্বর কীটনাশক পানে ঘোষের টিকিকাটা গ্রামের মৃত কাঞ্চন মিয়া হাওলাদারের ছেলে নয়া মিয়া হাওলাদার (৬৫), একই ভাবে ১৯ নভেম্বর বেতমোর রাজপাড়া গ্রামের হযরত আলীর ১৬ বছরের মেয়ে তানিয়া, ২০ নভেম্বর গলায় ফাঁস লাগিয়ে শহরের নিউমার্কেট এলাকার সালাম মিয়ার ছেলে নাঈম, ২১ নভেম্বর চালের পোকা নিধনের ট্যাবলেট খেয়ে জানখালী গ্রামের ওমর আলীর ১৫ বছর বয়সী মেয়ে সাদিয়া ও ২৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে উপজেলার শাখারীকাঠী গ্রামের ডালিম হাওলাদারের ছেলে বেল্লাল হাওলাদার (২৭) আত্মহত্যা করেন। মঠবাড়িয়া থানার ওসি আবদুলহ আল মামুন জানান, প্রত্যেকটি আত্মহত্যার ঘটনায়ই থানায় পৃথক পৃথক অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। আত্মহত্যার প্রবনতা কমাতে জনসচেনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করতে হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত