ঢাকা ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২৪ পৌষ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আগাম জাতের আলুর দাম ও ফলনে খুশি কৃষক

আগাম জাতের আলুর দাম ও ফলনে খুশি কৃষক

মাঠ ভরে গেছে আলুর সবুজ গাছে। এবার ঘোড়াঘাট উপজেলায় ২ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়েছে। আগাম জাতের আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে এবং দামও ভালো। অতীতের চেয়ে এবার আলুর চাষ অনেক বেশি হয়েছে। এবার আলুর উৎপাদন বেশি হবে বলে আশা করছেন চাষিরা। স্থানীয় আলু চাষেও বাম্পার ফলনের আশা করছেন আলুচাষি ও স্থানীয় কৃষি অফিস। বর্তমানে বাজারে প্রতি মণ ১ হাজার ১০০ টাকা থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি রবি মৌসুমে ১টি পৌরসভা ও উপজেলা ৪টি ইউনিয়নে ২ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে। গত মৌসুমে আলু চাষ করা হয়েছিল ১ হাজার ৮৫০ হেক্টোর জমিতে। এবার উৎপাদনে ফলন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ লাখ ৪০ হাজার টন। এবার উৎপাদনে ফলন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ২ লাখ ৬০ হাজার টন। ফলন দ্বিগুণ হওয়ার আশা করছে উপজেলা কৃষিঅফিস। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে এবার। অর্জিত লক্ষ্যমাত্রা থেকে উৎপাদন হয়েছে ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৮০ টন। উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন এবং ১টি পৌরসভায় বছরে আলুর চাহিদার প্রায় ১ লাখ ৪০ টন। অতিরিক্ত উৎপাদিত আলু উপজেলার বাইরে সরবরাহ করা হচ্ছে। আলু চাষিরা জানান, জমি থেকে আলু তুলতে শ্রমিকদের খরচ বহন করতে হিমশিম খেতে হয়। এছাড়া উপজেলার বাইরের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় স্থাানীয় মধ্যস্বত্ব ভোগীদের কাছে আলু বিক্রি করতে হয়। ফলে কৃষকের চেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছেন মধ্যস্বত্ব ভোগী আলু ব্যবসায়ীরা। ভর্নাপাড়া গ্রামের আলুচাষি মো. মাসুদ বলেন, হঠাৎ বাজারে আলুর দাম কমে যাওয়ায় তেমন লাভ হচ্ছে না। গত কয়েকদিন আগেও প্রতি বস্তা (৮০ কেজি) আলু প্রকার ভেদে ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ৫০০টাকা বস্তা বিক্রি হয়েছে। এখন আলু বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা বস্তা। একই এলাকার আলুচাষি রহমান বলেন, দুই বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি, এখনো আলু তোলা শেষ হয়নি, সম্পূর্ণ আলু তোলার পর বোঝা যাবে লাভ ক্ষতি। অনেক চাষি তাদের জমি থেকে সরাসরি মধ্যভোগী আলু ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করায় তেমন একটা লাভ করতে পারচ্ছেন না। আলুচাষি আ. হামিদ বলেন, এক বিঘা জমিতে ৩০ বস্তা (৬০ মণ) আলু উৎপাদন হয়। বিঘাপ্রতি খরচ হয় ২০ হাজার টাকার উপরে।

আর ৩০ বস্তা আলু বিক্রি হয় ৬০ হাজার টাকা। সব খরচ বাদ দিয়ে বিঘা প্রতি ১০/১৫ হাজার টাকা লাভ করা কঠিন হয়ে পড়ে। রাণীগঞ্জ বাজারের আলু ব্যবসায়ী আ. লতিফ বলেন, আমরা কৃষকের জমি থেকে কম দামে আলু কিনে ভ্যানে করে নিয়ে গিয়ে ধুয়ে বস্তায় ভরি তারপর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করি। এখানে শ্রমিকদের খরচ দিয়েও মোটামুটি ভালোই লাভ হয়। উপজেলা কৃষি অফিসার মো. রফিকুজ্জামান বলেন, এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও শৈত্যপ্রবাহ কম হওয়ায় আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। এছাড়াও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কৃষকদের কাছে গিয়ে আলুর ফলন বৃদ্ধি করতে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। আগামীতেও আলুর বেশি উৎপাদনের জন্য কৃষকদের নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়া হবে। তিনি বলেন, চলতি মৌসুমে আগাম জাতের আলু প্রায় ১ মাস পূর্বেই উত্তোলন শুরু করা হয়েছে। ফলন ভালো ও দামও ভালো পেয়েছেন চাষিরা। আলু আবাদে মজুরি খরচ, কীটনাশক, সার ও সেচ খরচ কম লাগে। ফলে আলুর আবাদ লাভজনক। আগাম জাতের আল চড়া দামে বিক্রি করে লাভবান হন কৃষক। এই আশায় তারা প্রতি বছর আগাম জাতের আলু চাষ করেন। চলতি বছরে ১টি পৌরসভা ও উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে মোট ২ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে উন্নত ফলনশীল (উফশী) জাতের আলু চাষ হয়েছে ১ হাজার ৮৭৫ হেক্টর জমিতে ও স্থাানীয় জাতের চাষ করা হয়েছে ৩৭৫ হেক্টর।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত