শ্যামনগরে পরিবেশ দূষণের অন্যতম ক্ষেত্র ইটভাটা। এ সব ইটভাটা থেকে নির্গত বিষাক্ত কালো ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষণসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে পাঁচ লক্ষাধিক মানুষ যে কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন বলে জানায় স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে অবৈধ ইটভাটা বন্ধসহ বৈধ ইটভাটাগুলোকে সরকারের নিয়মের আওতায় পরিচালনা করতে নানা পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানান উপজেলা নির্বাহী অফিসার। সরেজমিনে দেখা যায়, শ্যামনগরে বিভিন্ন নদীর পাড়ে ও বিলে গড়ে উঠেছে ১৫টির মতো ইটভাটা। এ সব ইটভাটায় ইট পোড়ানোর কাজে ব্যবহৃত চুল্লি থেকে নির্গত বিষাক্ত কালো ধোঁয়া ও ইটের গুঁড়ো বাতাসের সঙ্গে মিশে প্রতিনিয়ত পরিবেশ দূষণ করছে। ফলে গাছপালা মরে যাওয়া, জমিতে ফসল না হওয়াসহ নদীতে মাছের সংকট দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। পাাশাপাশি শ্বাসকষ্ট ও চর্মরোগসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে বছরের পর বছর ভুগছে শিশুসহ সব বয়সের মানুষ। বেশিরভাগ ইটভাটা সনাতন পদ্ধতিতে পরিচালিত হওয়ায় পরিবেশ দূষণের মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।
তাই সনাতন পদ্ধতি পরিবর্তন করে পরিবেশবান্ধব নতুন জিগজাগ পদ্ধতিতে ইট পোড়ানোসহ ইটভাটা পরিচালনা করতে সরকার ২০২৫ সাল পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দিয়েছে। অন্যথায় দূষণকারী কোনো ইটভাটা পরিচালনা করতে দেয়া হবে না বলে কঠোর নির্দেশনাও আরোপ করা হয়েছে। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে যৌথভাবে কাজ করছে সাতক্ষীরার পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন। বিভিন্ন সময়ে দূষণকারী ইটভাটাগুলোতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানও পরিচালিত হচ্ছে বলেও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান। সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহম্মেদ জানান, পরিবেশ দূষণ রোধে ইটভাটা নিয়ন্ত্রণে মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা ও নিয়মিত অভিযান পরিচালনাসহ নানা পদক্ষেপ নেয়ার কথা হচ্ছে। এছাড়া জেলা প্রশাসন থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতও পরিচালনা করা হচ্ছে। পরিবেশ দূষণ ও স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়টি স্বীকার করে ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি আফজালুল হক সরদার জানান, সরকারি বিধি নিয়ম মেনে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার চেষ্টা করছেন তারা। তিনি বলেন, ‘যদি আরো উন্নত প্রযুক্তি থাকে তাহলে আমরা সেভাবেই ইটভাটা পরিচালনা করব। যদি না পারি বন্ধ করে দেব। পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ১৫টি ইটভাটার মধ্যে সরকার অনুমোদিত লাইসেন্সপ্রাপ্ত ১টি ও নেই, বৈধ ইটভাটা নেই কারো লাইসেন্স থাকলেও তা নবায়ন নেই। উপজেলা নির্বাহী অফিসার রনী খাতুন বলেন কয়েকটি ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে বৈধ কোনো কাগজপত্র না পেয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।