মায়ের হাত থেকে ছুটে গিয়ে ট্রেনের নিচে পড়ে মরিয়ম নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রোববার দুপুরে খুলনা-মোংলা রেলপথের দিগরাজ বাজার এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। দায়িত্বরত লাইনম্যান রেলগেট না ফেলায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা। প্রত্যক্ষদর্শী ডি এল মল্লিক বলেন, মোংলা থেকে ছেড়ে আসা খুলনার একটি লোকাল বাসে করে দুটি বাচ্চা নিয়ে যাচ্ছিলেন মহিলা। এ সময় রেলক্রসিং এলাকায় জ্যাম পড়ে গাড়িটি আটকা পড়ে। হঠাৎ মোংলা থেকে যশোরের উদ্দেশে ছেড়ে আসা মোংলা কমিউটার নামে ট্রেনটি দ্রুতগতিতে রেলক্রসিং পার হচ্ছিল। জীবন বাচানোর তাগিদে দ্রুত ওই মহিলা যাত্রীবাহী গাড়ি থেকে বাচ্চা নিয়ে নেমে যায়। এ সময় মহিলার হাতে ধরা বাচ্চাটি ছুটে গিয়ে মোংলা কমিউটারের নিচে পড়ে মৃত্যু বরণ করে। দায়িত্বরত লাইনম্যান রেলগেট না ফেলায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। নিহত শিশুর মা ফাতেমা বেগম জানায়, দুই সন্তানকে নিয়ে মোংলা থেকে যাত্রীবাহী বাসে করে ফয়লার দিকে যাচ্ছিলেন সে। পথিমধ্যে দিগরাজের রেলক্রসিংয়ে বাসটি পৌঁছালে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা মোংলা কমিউটার নামে ট্রেনটি দ্রুত গতিতে রেলক্রসিং পার হচ্ছিল। এ সময় যাত্রীবাহী বাস থেকে দ্রুত নামতে গিয়ে তার হাত থেকে ছুটে গিয়ে শিশু মরিয়ম ট্রেনের নিচে পড়ে। পরে ট্রেনটি চলে গেলে শিশুটিকে উদ্ধার করে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা। তবে হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই শিশু মরিয়ম মারা গেছে বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক শামিম হাসান। এদিকে অবহেলার কারণে দিগরাজের রেলক্রসিংয়ে দায়িত্বে থাকা গেটম্যান মো: শাহিনের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন বিক্ষুদ্ধ জনতা। এ সময় মোংলা-খুলনা মহাসড়কে সকল প্রকার যান চলাচল বন্ধ করে দেয় তারা। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করলে এই সড়কে আবার যান চলাচল শুরু হয়। ঘটনার পর থেকেদিগরাজ রেলক্রসিংয়ের গেটম্যান পলাতক । তার বাড়ি নাটোর জেলায় বলে জানা গেছে। মোংলা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুশফিকুর রহমান তুষার জানান, দায়িত্ব অবহেলার কারণে গেটম্যান মো. শাহিনের বিরুদ্ধে রেল পুলিশ ব্যবস্থা নেবে এবং এ ঘটনায় মামলা করা হবে।
