কুষ্টিয়ার মিরপুরে বিএনপির নেতাকর্মীদের সাথে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় গুরুতর আহত খোকন আলী (৩৫) নামে এক জামায়াত কর্মী এবং পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে ছুরিকাঘাতে আলা-আমিন সর্দার (১৮) এক যুবক খুন হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকাল ৩টায় ঢাকায় ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। খোকন আলী বুরাপাড়া গ্রামের নওশের আলীর ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মিরপুর থানার ওসি মোমিনুল ইসলাম ও আমলা ইউনিয়ন জামায়াতের আমির নাসিম রেজা মুকুল। এর আগে, গত রোববার উপজেলার আমলা ইউনিয়নের বুরাপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে জামায়তের সঙ্গে বিএনপির সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ৩০ জন আহত হন। আহতরা কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ও মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক সোজা উদ্দিন জোয়ার্দার বলেন, সংগঠনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমলা ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর আমির মুকুল হোসেনকে বিদ্যালয়ের সভাপতি প্রার্থী করা হয়। তিনি সভাপতি প্রার্থী হওয়ার পর থেকে স্থানীয় বিএনপি নেতা ও স্কুলের সভাপতি প্রার্থী নাসির বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দেন। এর প্রতিবাদে স্কুল মাঠে একটি প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেন জামায়াতে ইসলামীর ওই প্রার্থী। এ সময় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হামলা করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। নাসিরের নেতৃত্বে শতাধিক লোকজন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করেন। এতে আমাদের নেতাকর্মীরা আহত হয়েছেন। আহত খোকন আলী ঢাকার ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় খোকন মারা গেছেন। তিন জামায়াতের কর্মী। হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই। অন্যদিকে পুলিশ জানায়, আল-আমিন ও তার বাবা রবিউল ওই এলাকায় মাংসের ব্যবসা করতো। একই এলাকার আসাদুলের কাছে বেশ কিছুদিন আগের মাংস বিক্রির ২০ হাজার টাকা পাওনা ছিল। কিন্তু আসাদুল টাকা না পরিশোধ করে তালবাহনা করছিলেন। গত রোববার বিকালে রবিউল টাকা চাইলে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। এর জের ধরে রাতে আসাদুল তার দুই ছেলে আকুল ও আকাশ আরো কয়েকজন সঙ্গে করে চাঁদ মার্কেটে এসে রবিউলের ওপর হামলা চালান। এ সময় আল আমিন এবং লিটন প্রতিবাদ করলে আকুল ও আকাশের হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আল আমিন এবং লিটনকে কুপিয়ে পালিয়ে যান। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে অপারেশন থিয়েটারে আলামিনের মৃত্যু হয়। মিরপুর থানার ওসি মোমিনুল ইসলাম বলেন, স্কুল কমিটি নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত অবস্থায় ঢাকায় খোকন নামে একজন মারা গেছেন বলে জানতে পেরেছি। এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি। কাউকে আটক করা যায়নি। ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।