নানান আয়োজনে টাঙ্গাইলে পিঠা ও লোকজ উৎসব

প্রকাশ : ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

টাঙ্গাইলে তিনদিনব্যাপী গ্রাম বাংলার লোকজ সাংস্কৃতিক ও পিঠা উৎসব শেষ হয়েছে। ঢেঁকি দিয়ে ধান মাড়াই, ঐতিহ্যবাহী লাঠিবাড়ি ও হাডুডু খেলাসহ গ্রামীন নানা আয়োজন এই অনুষ্ঠানটি শেষ হয়। জানা যায়, আবহমান বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে টাঙ্গাইলে ১৫ জানুয়ারি থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লোকজ সাংস্কৃতিক ও পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। গত বুধবার পৌর উদ্যোনে এ লোকজ সাংস্কৃতিক ও পিঠা উৎসব শুরু হয়। প্রথমদিনেই বাঙালির ইতিহাস-ঐতিহ্য ফুটিয়ে তোলা মুখরোচক পিঠা উৎসবে মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। পাশাপাশি লাঠি খেলা, কাবাডি খেলা অনুষ্ঠিত হয়। দর্শনার্থীরা চমৎকার এ আয়োজনে এসে বেশ আনন্দিত। প্রতিবছরই এমন আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। এ উৎসবে ৪২টি স্টলে দেশীয় ঐতিহ্য ভাপা পিঠা, দুধের পিঠা, নকশি, চিতই, পাঠিসাপটা, জামাই বরণ পিঠা, ডাল ও তালের পিঠাসহ বাহারি পিঠার শোভা পায়। উৎসবে ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা, মেয়েদের হাডুডু খেলা ও বায়োস্কোপ প্রদর্শনের পাশাপাশি গ্রামীন নানা আয়োজন উপভোগ করছে সব বয়সী মানুষ। দর্শনার্থী বিথী বলেন, দীর্ঘদিন পরে এমন আয়োজনে আমরা খুশি। সাধারণত এমন আয়োজন এখন দেখা যায় না। এ রকম আয়োজন প্রতি বছরই করার দাবি করেন তিনি। পিঠা ব্যবসায়ীরা বলেন, নিজের হাতে তৈরা করা গ্রাম বাংলার পিঠাগুলো উৎসবে আমরা বিক্রি করার জন্য নিয়ে এসেছি। মেলায় অংশগ্রহণ করতে পেরে আমরা খুশি। তবে প্রতি বছরই এমন আয়োজন করার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি করছি।

লোকজ সাংস্কৃতিক ও পিঠা উৎসব কমিটির আহ্বায়ক আবুল কালাম মোস্তফা লাবু ও সদস্য সচিব অনিক রহমান বুলবুল বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে এই বাংলাদেশে লোকজ সংস্কৃতি বিলুপ্তির পথে। যান্ত্রিক যুগে মোবাইলের কারণে শিশুরা লোকজ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থেকে একেবারে দূরে সরে গেছে। লোকজ সংস্কৃতি কি, শিশুরা তা জানে না। সম্প্রতি অভিভাবকের কাছে জানতে পারলাম, শিশু তার বাবাকে প্রশ্ন করেছে মুড়ি কোন গাছে হয়। মুড়ি যে গাছে হয় না, শিশুর এমন প্রশ্ন দোষের না। কারণ শিশুরা মাঠে-ঘাটে খেলাধুলার বাস্তবতা থেকে অনেকটাই দূরে। সেই অনুভব থেকে আমরা এ রকম লোকজ সাংস্কৃতিক ও পিঠা উৎসবের আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। হারিয়ে যাওয়া গ্রামীণ লোকজ ও সাংস্কৃতি আগত ও বর্তমান প্রজন্মের কাছে তুলে ধরাই এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য। আজ সেই ৩ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানটি শেষ হয়েছে। তবে অনেকদিন পর এইরকম অনুষ্ঠান টাঙ্গাইলবাসির কাছে বেশ সাড়া ফেলেছে।