নাটোরের বড়াইগ্রামের বাজিতপুর বিলে শুষ্ক মৌসুমেও জলাবদ্ধতার কারণে কমপক্ষে ৩০০ বিঘা জমিতে কোন ফসল চাষ করা সম্ভব হয়নি। বিলের মাঝে অপরিকল্পিত পুকুর খনন আর নদী দখলের ফলে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে প্রান্তিক চাষিদের পথে বসার উপক্রম হয়েছে।
জানা যায়, এক সময় বর্ষার পানি নেমে যাওয়া মাত্র বিলজুড়ে সরিষা, গম, বিনাচাষে রসুনসহ নানা ফসলের আবাদ হতো। কিন্তু বিলের মধ্য দিয়ে বয়ে চলা একটি খাল দখল করে বাড়ি নির্মাণ, বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কে যথাযথ স্থানে ব্রিজ নির্মাণ না করা এবং যত্রতত্র পুকুর খননের কারণে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে বিলের উপর অংশের জমিতে কিছু ফসল চাষ হলেও নীচু জমিগুলোতে আগাম জাতের সরিষা, গম, রসুনসহ কোন ফসল চাষাবাদ করতে পারছেন না কৃষকরা। এতে বাজিতপুর, ফুলবতি, রয়না ভরট ও মানিকপুর গ্রামের প্রায় শতাধিক কৃষকের পথে বসার উপক্রম হয়েছে।
স্থানীয় কলেজ শিক্ষক আয়নাল হক বলেন, এ বিলে জলাবদ্ধতার নিরসনের জন্য একাধিকবার বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করেও কোন লাভ হয়নি। বাজিতপুর গ্রামের কৃষক জসীম উদ্দিন বলেন, এ বিলে আমার ১০ বিঘা জমি আছে। সেগুলো এখনও পানির নিচে। যদি সঠিক সময়ে পানি নামতো, তাহলে সরিষাসহ অন্যান্য ফসল চাষ করে পুনরায় বোরো ধান চাষ করতে পারতাম। এই জমির ফসলেই আমার সংসারের চালিকাশক্তি। অথচ অপরিকল্পিত পুকুর খননে আমার সে পথ বন্ধ হয়ে গেছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মাহাদি হাসান বলেন, বড়াইগ্রামের অধিকাংশ জমি তিন ফসলী। কিন্তু বিভিন্ন বিলে অপরিকল্পিত পুকুর খননের কারণে এখন অনেক জমিতে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বাজিতপুর বিলেও জলাবদ্ধতায় অন্তত ৩০০ বিঘা জমিতে কোন ফসল করা সম্ভব হচ্ছে না। ইউএনও লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে বিলের জলাবদ্ধতা নিরসনের উদ্যোগ নেয়া হবে।