ঢাকা ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ৭ মাঘ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

শ্বশুরবাড়িতে স্ত্রীকে হত্যা আদালতে স্বামীর দায় স্বীকার

শ্বশুরবাড়িতে স্ত্রীকে হত্যা আদালতে স্বামীর দায় স্বীকার

কক্সবাজারের চকরিয়ায় শ্বশুরবাড়িতে ছুরিকাঘাতে স্ত্রীকে খুনের ঘটনার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন স্বামী শওকত হাসান মেহেদী (২২)। এ সময় শাশুড়িকেও ছুরিকাঘাত করার দায় স্বীকার করেন তিনি। গত শনিবার পুলিশ মেহেদীকে চকরিয়া সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করে।

সেখানে আদালতের কাছে এ জবানবন্দি দেন তিনি। চকরিয়া থানার ওসি মঞ্জুর কাদের ভূঁইয়া বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে লামা উপজেলার ইয়াংছা বাজার এলাকা থেকে মেহেদীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে রাত ১২টার দিকে তাকে চকরিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

গত শুক্রবার জুমার নামাজের আগ মুহূর্তে চকরিয়া পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মজিদিয়া মাদ্রাসা পাড়া এলাকায় বাপের বাড়িতে ছুরিকাঘাতে স্বামীর হাতে খুন হন উম্মে হাফসা তুহি (১৮)। এ সময় মেহেদী তার শ্বাশুড়িকেও ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। ছুরিকাঘাতে নিহত তুহি ওই এলাকার বাসিন্দা ও চকরিয়া উপজেলা প্রেসক্লাবের দপ্তর সম্পাদক সাংবাদিক আবদুল হামিদের কন্যা।

অভিযুক্ত শওকত হাসান মেহেদী চকরিয়া উপজেলার ফাঁশিয়াখালী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আজমউল্লাহ পাড়া এলাকার আবুল হাশেমের ছেলে। পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি হলেও টিকটকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি। গত ৮ মাস পূর্বে মেহেদীর সঙ্গে তুহির বিয়ে হয়। এদিকে উম্মে হাফসা তুহি হত্যার ঘটনায় ৫ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন নিহতের বাবা সাংবাদিক আব্দুল হামিদ। গত শুক্রবার রাতে চকরিয়া থানায় মামলাটি করা হয়। এতে অভিযুক্ত শওকত হাসান মেহেদী, তার বাবা আবুল হাশেম, মা মমতাজ বেগম ও বোন সুমাইয়া আক্তারের নাম উল্লেখ করে আরো ২-৩ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। নিহতের বাবা আবদুল হামিদ বলেন, ৮ মাস আগে আমার মেয়ে তুহিকে অপহরণ করে নিয়ে যায় মেহেদী। বিষয়টি নিয়ে আমি থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ আমার মেয়েকে উদ্ধার এবং অপহরণকারীকে ধরতে সাঁড়াশি অভিযান চালায়।

এর কিছুদিন পর উভয় পক্ষের ব্যক্তিবর্গের সমঝোতায় তুহি এবং মেহেদীর কামিননামা সম্পন্ন হলে আমরা দুই পক্ষই তা মেনে নেই। বিয়ের পর আমার মেয়ে, তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন বেশ কয়েকবার আমাদের বাড়িতে আসে এবং আমরাও বেয়াই বাড়িতে যাই। বিয়ের পর কিছুদিন আমার মেয়ে শ্বশরবাড়িতে ভালো থাকলেও মেয়েকে অপহরণ-পরবর্তী থানায় অভিযোগ দেয়ার অজুহাত তুলে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমার মেয়ের উপর অমানুষিক নির্যাতন শুরু করে। বিষয়টি মেয়ের কাছ থেকে জানার পর গত ৫ ডিসেম্বর আমি মেয়েকে শশুরবাড়ি থেকে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসি। চকরিয়া থানার ওসি মঞ্জুর কাদের ভুইয়া বলেন, নিহত তুহির সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্ত শেষে শনিবার সকালে মরদেহ পরিবারের লোকজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তিনি আরো বলেন, তুহি হত্যার ঘটনায় ৫ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন নিহতের বাবা সাংবাদিক আব্দুল হামিদ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত