ঢাকা মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

খিরা চাষে কৃষকের মুখে হাসি

খিরা চাষে কৃষকের মুখে হাসি

উত্তরাঞ্চলের শস্যভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলায় খিরা চাষে লাভের মুখ দেখছেন স্থানীয় কৃষকরা। অল্প সময়ে ও স্বল্প খরচে অধিক লাভ হওয়ায় দিন দিন এ অঞ্চলে খিরা চাষের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। খিরা চাষে খরচ কম এবং এই ফসলে লাভ বেশি হওয়ায় ভালো লাভের স্বপ্ন দেখছেন বগুড়ার চাষিরা। কৃষি বিভাগ জানায় খিরা এখন অর্থকরী ফসল।

খিরা চাষ করে অনেক কৃষকের ভাগ্য বদলে গেছে। ঈদ ও বিয়ে মৌসুমে খিরার চাহিদা বেড়ে যায়। তখন খিরার দাম বেড়ে যায়। খিরা রবি মৌসুমে বেশি উৎপাদন হয়ে থাকে। বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহকারী কৃষি অফিসার ও পরিসংখ্যানবিদ ফরিদ উদ্দিন জানান জেলা এবার রবি মৌসুমে ২৬৭ হেক্টর জমিতে খিরার চাষ হয়েছে। রবি মৌসুম, খরিপ-১, খরিপ-২ মিলিয়ে জেলায় ৪০০ হেক্টর জমিতে খিরার চাষ হয়ে থাকে। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় খিরা ভালো ফলন হবে এমনটাই আশা করেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মতলুবর রহমান। তাছাড়া সামনে রমজান ও ঈদে খিরার চাহিদা বেড়ে গেলে কৃষকের বিনিয়োগের দ্বিগুণ লাভবান হবে হওয়ার আশা করছেন তিনি।

জানা গেছে বগুড়া জেলার নন্দীগ্রাম উপজেলার নামুইট উত্তর পাড়ার মৃত কাওছার আলীর ছেলে মাসুদ রানা প্রতি বছরের মত এবছরও প্রায় তিন বিঘা জমিতে স্থানীয় ও উচ্চ ফলনশীল জাতের খিরার চাষ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। সে মাথায় ডালি নিয়ে খিরার জমি থেকে খিরা তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছে। খিরা চাষি রানার জানান, নিজের জমি কম থাকার কারণে অন্যের জমি বছর পত্তন (ভাড়া) নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ধরনের ফসল টমেটো, বেগুন, মরিচ খিরা চাষাবাদ করে আসছেন। প্রতিবছরের মত এবছরও পৌষ মাসের দিকে তিন বিঘা জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের ১৫ হাজার বীজ বপন করেছিল। তিন বিঘা জমি পত্তন নিয়ে খিরা চাষে সব খরচ দিয়ে এ পর্যন্ত তার ৯০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। নিজের তেমন একটা জমি না থাকায় অন্যের জমি পত্তন নিয়ে খিরা চাষ করেছে। খিরা তোলা শুরু করেছেন। তিন দিন পর পর খিরা তোলেন। তখন প্রতিচালানে ৫/৬ মণ খিরা উঠতো। এ সময় বাজারে ১৮শ টাকা মণ বিক্রয় করেছেন। এখন প্রায় প্রতিদিনই ১০ মণ করে খিরা উঠছে যা এখন বাজারে ১২শ টাকা মণ বিক্রয় করছে।

এ পর্যন্ত ছয়টি চালান তুলেছেন,ছয়টি চালানে প্রায় ৮০ হাজার টাকা বিক্রি করেছেন। যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে এবং খিরার বাজার মূল্যে ভালো থাকে তাহলে শেষ পর্যন্ত তিন বিঘা জমি থেকে ৪ লাখ টাকার খিরা বিক্রয় করার আশা করছেন।

কৃষকরা জানান, খিরা চাষে সঠিক পরিচর্যা এবং আধুনিক পদ্ধতি অনুসরণ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গাজীউল হক বলেন, রানা অত্যন্ত সফল একজন কৃষক। তিনি প্রতিবছরের মতো এবছরও তিন বিঘা জমিতে লাল তীর জাতের খিরার চাষ করেছে। যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে এবং এর বাজার মূল্য ভালো থাকে তাহলে রানা খিরা চাষে লাভবান হতে পারবে। উল্লেখ্য, এ অঞ্চলে চাহিদা মিটিয়ে খিরা দেশের বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত