নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে ফেনী জেলার দাগনভূঞা উপজেলায় আবাদ হচ্ছে বিষমুক্ত হাইব্রিড জাতের করলা। পরিবেশবান্ধব জৈব সার, ফেরোমন ফাঁদ, হলুদ আঠালো ও মালচিং পেপার ব্যবহার করে উপজেলায় সবজি চাষ পদ্ধতি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে উৎপাদিত সবজির চাহিদা বেড়েছে। ফলে দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, রাসায়নিক সার, বালাইনাশক ও আগাছানাশক বাদ দিয়ে সবুজ সার, কম্পোস্ট, জৈবিক বালাই দমন এবং যান্ত্রিক চাষাবাদ ব্যবহার করে শাকসবজি চাষই বিষমুক্ত জৈব সবজি উৎপাদন পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে প্রাকৃতিভাবে ফসল উৎপাদনকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়। কোনো রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার না হওয়ায় ফসল দূষিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। ফলে বিষমুক্ত নিরাপদ শাকসবজি উৎপাদন নিশ্চিত হয়।
এ পদ্ধতি ব্যবহার করে উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের সেকান্দরপুর এলাকার কৃষক আবদুল মান্নান ৩০ শতক জমিতে বিষমুক্ত করলার আবাদ করছেন। সরেজমিন দেখা গেছে- কৃষক আবদুল মান্নান করলা জমিতে পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। আবার তোলার উপযোগী করলা তুলছেন। বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যে হলুদ ফাঁদ ও ফেরোমন ফাঁদসহ অন্যান্য পোকা দমন পদ্ধতিতে জমিতে বিভিন্ন সবজি চাষ করছেন কৃষক আবদুল মান্নানসহ এলাকার অন্যান্য কৃষকরা। আবদুল মান্নান বলেন, উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে নিরাপদ উপায়ে যেসব ফসল উৎপাদন করি, সেগুলো প্রয়োজনে আলাদা বাজারে বিক্রির ব্যবস্থা করে ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে পারলে আমরা কৃষকরা আরো লাভবান হব। পোকাণ্ডমাকড় মারার জন্য ফেরোমন ফাঁদ, হলুদ আঠালো ফাঁদ যে কারণে অনেক টাকা সাশ্রয় হচ্ছে। এ পর্যন্ত প্রায় ২০০ কেজি করলা প্রাইকারী বিক্রি করা হয়েছে। প্রতি কেজি করলা ৪০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। মাচা পদ্ধতিসহ খরচ হয়েছে প্রায় ১২ হাজার টাকা। তিনি আরও বলেন, তোলার উপযোগী করলা আরও অনেক করলা আছে। ৭-৮ দিন পর্যন্ত এগুলো তোলা যাবে। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সফিক উল্যাহ ও সুলতানা নিগার রহমান বলেন, কৃষকরা কীভাবে নিরাপদ ফসল উৎপাদন করে লাভবান হতে পারবে এ ব্যাপারে প্রযুক্তি দিয়ে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. কামরুজ্জামান, জৈবিক উপায়ে নিরাপদ সবজির চাষাবাদের লক্ষ্যে কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও কৃষি উপকরণ বিতরণ করা হয়।