ঢাকা ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৭ ফাল্গুন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

চকরিয়ার ওসিসহ ৫৯ জনের বিরুদ্ধে দুই মামলা

চকরিয়ার ওসিসহ ৫৯ জনের বিরুদ্ধে দুই মামলা

পুলিশের সাবেক ও বর্তমান দুই পরিদর্শকে প্রধান আসামি করে ৫৯ জনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার আদালতে পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে। যার মধ্যে একটি মামলার বাদী দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার কক্সবাজারের প্রতিবেদক মনছুর আলম মুন্না। গত মঙ্গলবার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত কক্সবাজারে এই মামলাটি দায়ের করা হয়।

মামলাটির প্রধান আসামি চকরিয়া থানার ওসি মনজুর কাদের ভূঁইয়াসহ ৮ জন। অপর ৩ জন হলেন- একই থানার এসআই যথাক্রমে ফরহাদ রাব্বি ইশান, এসআই সোহরাব সাকিব, এএসআই পারভেজ ও একই থানার চার কনষ্টেবল।মামলার ফৌজদারী দরখাস্তে বাদী উল্লেখ করেছেন, ওসি মনজুর কাদের ভূঁইয়া চকরিয়া থানায় যোগদানের পর থেকে পেশাদারিত্বের বাইরে গিয়ে আসদাচরণ, ঘুষ-দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে জনসাধারণকে জিম্মি ও ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় ও হয়রানির অভিযোগ উঠে। এসব ব্যাপারে বিভিন্ন পত্রিকায় তথ্যবহুল সংবাদ প্রকাশিত হলে তার ওপর ক্ষেপে গিয়ে অপহরণ ও হত্যার হুমকি দেন ওসি মনজুর কাদের ভূঁইয়া। ভিকটিম মনছুর বলেন, এরপর গত ২৫ জানুয়ারি গভীর রাতে প্রধান আসামি চকরিয়া থানার ওসির নির্দেশে সুদুর চকরিয়া থেকে কক্সবাজার শহরের কৃষি অফিস সড়কের দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের কক্সবাজার অফিসে এসে তাকে তুলে নিয়ে যায়- এসআই ফরহাদ রাব্বি ঈশান, এসআই সোহরাব সাকিব ও এএসআই পারভেজসহ ৪ জন কনস্টেবলসহ চকরিয়া থানার একদল পুলিশ।

এ সময় দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকা অফিসে রক্ষিত ২টি ল্যাপটপ, ৪টি পেনড্রাইভ ও অন্যান্য সামগ্রী লুট করে নিয়ে পুলিশ। এরপর তাকে চকরিয়া থানায় নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে অমানুষিক নির্যাতন করেন আসামিরা। এভাবে ১ দিন আটকে রেখে মিথ্যা মামলা দিয়ে চালান দেন ওসি মনজুর কাদের ভূঁইয়া। প্রায় ২১ দিন পর জামিনে মুক্তি পান মনছুর আলম মুন্না। বাদীর আইনজীবী সালাহ উদ্দীন আহমদ বলেন, সাজানো এ মামলায় ওসি নিজেই বাদী ও নিজেই রেকর্ডকারী কমকর্তা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া গভীর রাতে নিজের আঞ্চলিক এখতিয়ার বহির্ভূত এলাকায় গিয়ে একজন সাংবাদিককে ধরে এনে নির্যাতন করা আইনের পরিপন্থি ও মানবাধিকার লংঘন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওসমান গনি বলেন বিজ্ঞ বিচারক আকতার জাবেদ মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তপূর্বক ৪৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন।

চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আহসান হাবীব পলাশ বলেন, মামলা বিষয়টি আমি অবগত নই। কেউ অন্যায় করলে তার বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অভিযুক্ত ওসি মনজুর কাদের ভূঁইয়া বলেন, মামলার বিষয়টি জেনেছি। তদন্তে যা হয়। একই আদালতে অপর মামলাটির বাদি ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়নের অলিয়াবাদ এলাকার মৃত মোহাম্মদ ইলিয়াসের ছেলে আকতার হোছাইন। ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি মাওলানা সাঈদের মুক্তিকে কেন্দ্র করে সংগঠিত ঘটনায় ঈদগাঁও স্টেশনের পাশে বাদীর ভাই আবদুর রশিদের মৃত্যুর ঘটনায় এই মামলাটি দায়ের করা হয়। এতে প্রধান আসামি করা হয়েছে ওই সময়ের ওসি-ডিবি একেএম মনজুর আলমকে। ওই মামলার দ্বিতীয় আসামি বর্তমান চকরিয়া থানার ওসি এবং ওই সময় ঈদগাঁও পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মনজুর কাদের ভূঁইয়া। মামলাটিতে পুলিশসহ ৫১ জনকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ ছাড়া মামলাটির অন্যান্য আসামিরা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী আমির হোছেন জানিয়েছেন, পুলিশসহ আওয়ামী লীগের লোকজন গুলি করে রশিদকে হত্যা করা হয়। মামলাটি আমলে নিয়ে ডিবিকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত