ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫, ৬ চৈত্র ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সেতু নির্মাণ হলেও নেই সংযোগ সড়ক

সেতু নির্মাণ হলেও নেই সংযোগ সড়ক

যশোরের কেশবপুরের বুড়িভদ্রা নদীর ওপর নির্মিত সেতুতে সংযোগ সড়কের দুই পাশে মাটি না থাকায় অন্তত ১২ গ্রামের মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। নির্মাণাধীন এ সেতুর কাজ নির্দিষ্ট সময়ে শেষ না হওয়ায় তৈরি হয়েছে ভোগান্তি। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, ওই নির্মাণাধীন সেতুটির সংযোগ সড়কের কাজ না হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে বিভিন্ন সময়ে ঘটছে দুর্ঘটনা। প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন ওই সেতুর কাজ দীর্ঘ আড়াই বছরেও শেষ না হওয়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে এলাকার মানুষের।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় কুণ্ডলদিয়া বাজার থেকে গোলাঘাটা সড়কের বুড়িভদ্রা নদীর ওপর ৪২ মিটার দৈর্ঘ্যরে একটি আরসিসি সেতু নির্মাণে দরপত্র আহ্বান করা হয়। যশোর অঞ্চল গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে সেতুটি নির্মাণে তিন কোটি ২৯ লাখ ৩০ হাজার ৬০৩ টাকা চুক্তিমূল্য নির্ধারণ করা হয়।

কাজটি পান খুলনার সোনাডাঙ্গার মেসার্স অর্পি-অর্নি এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারী মাহফুজা খানম। ২০২২ সালের ২ জুন সেতু নির্মাণ কাজ শুরু করেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। সিডিউল অনুযায়ী ২০২৩ সালের ২৪ নভেম্বর সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা। তবে দীর্ঘ আড়াই বছর অতিবাহিত হলেও শেষ হয়নি নির্মাণ কাজ। এলাকাবাসী জানান, বুড়িভদ্রা নদীর ওপর একটি সরু বেইলি ব্রিজ ছিল। যা এলাকায় নেপালনাথের ব্রিজ নামে পরিচিত। এ সড়ক দিয়ে মজিদপুর, কুশুলদিয়া, মির্জাপুর, সরফাবাদ, বাজিতপুর, লালপুর, বিদ্যানন্দকাটি, মঙ্গলকোটসহ আশপাশের প্রায় ১২টি গ্রামের মানুষ চলাচল করেন। সেতুর পশ্চিমপাশে পূর্বপাশে গোলাঘাটা বাজারসহ রাসবিহারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দাখিল মাদ্রাসা থাকায় এ সেতুটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হলেও সংযোগ সড়ক করতে কালক্ষেপণ করায় এর সুফল পাচ্ছেন না এলাকাবাসী। তবে, সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে বলা হচ্ছে, বুড়িভদ্রা নদীতে জলাবদ্ধতার পানি থাকায় সেতুর কাজ করতে বিলম্ব ওই সেতুর ওপর দিয়ে বাইসাইকেল ঠেলে নিয়ে পার হওয়ার সময় মির্জাপুর গ্রামের কৃষক আফসার উদ্দীন বলেন, এই সেতুর কাজডা তাড়াতাড়ি হয়ে গেলি ভালো হয়। সেতু দিয়ে উঠতে-নামতে গিয়ে খুব সমস্যা। মজিদপুর গ্রামের রহমত আলী বলেন, এপারে মোটরসাইকেল রেখে শিশু সন্তানকে কোলে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে সেতুর ওপারে নিয়ে গিয়েছিলাম। সেতুতে সংযোগ সড়ক দ্রুত হয়ে গেলে এমন কষ্ট করতে হতো না। সেতুর সন্নিকটে বসবাসকারী গৃহবধূ হামিদা বেগম বলেন, ‘সেতুতে ঝুঁকি নিয়ে উঠতে গিয়ে প্রায়ই একটা-দুইটা দুর্ঘটনা ঘটে, পড়ে যায়। যাতায়াতে খুব সমস্যা হচ্ছে।’

মির্জাপুর গ্রামের স্কুলছাত্র মাসুদুজ্জামান জানায়, ‘এই সেতুটি ঠিক করে দিলে আমরা ভালোভাবে স্কুলে যাতায়াত করতে পারি। সেতুর এ অবস্থার জন্য অনেক বিপদ ঘটছে এই জায়গায়।’ মজিদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হুমায়ূন কবীর পলাশ বলেন, ‘এলাকার মাঠ-ঘাট পানিতে তলিয়ে থাকায় মাটি পাওয়া যাচ্ছে না। যে কারণে সেতুর দুই পাশের কাজের বিলম্ব হচ্ছে। ঠিকাদারকে বলা হয়েছে দ্রুত কাজ শুরুর জন্য।’ সেতু নির্মাণ কাজের ঠিকাদার মেসার্স অর্পি-অর্নি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মাহফুজা খানমের পক্ষে ইদ্রিস আলী বলেন, ‘সড়কের উভয় পাশে পানি থাকায় কাজ বন্ধ রয়েছে। পানি সরে না যাওয়া পর্যন্ত বাইপাস সড়কটিও ঠিক করা যাচ্ছে না। পানি কমে গেলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে। এ ব্যাপারে কেশবপুর উপজেলা প্রকৌশলী নজিবুল হক বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না হওযায় মেয়াদ চলতি বছরের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। পানির কারণে সেতুটির অন্যান্য কাজ বন্ধ রয়েছে। আশা করা হচ্ছে এ মাসের মধ্যেই সেতুটির বাকি কাজ শুরু হয়ে যাবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত