ঠাকুরগাঁওয়ে ফেসবুকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে মিলন হোসেন নামে এক কলেজছাত্রকে অপহরণের ২৫ দিন পর তার গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দুই যুবক ও এক তরুণীকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার মিলনের লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম। মিলন হোসেন (২৩) দিনাজপুর পলিটেকনিক কলেজের ছাত্র ও ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার খনগাঁও চাপাপাড়া গ্রামের পানজাব আলীর ছেলে।
আটকরা হলেন- ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার শিবগঞ্জ মহেশপুর পশ্চিম পাড়া গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে সেজান আলী। আরাজী পাইকপাড়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে মুরাদ (২৫) এবং সালন্দর শাহীনগর (তেলীপাড়া) গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে রত্না আক্তার ইভা (১৯)। ২০২৫ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি মিলন হোসেনের সঙ্গে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অনলাইনে (ফেসবুকের) অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা হয়। একপর্যায়ে তারা মিলন হোসেনকে দেখা করার কথা বলে। সে অনুযায়ী মিলন দেখা করার উদ্দেশে ওই দিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঠাকুরগাঁও পৌরশহরের মুন্সিরহাট পলিটেকনিক্যাল কলেজের পিছনে লিচু বাগানে যায়। সেখান থেকে কলেজ পড়ুয়া মিলনকে অপহরণ করে একটি চক্র।
পুলিশ আরো জানায়, ঘটনার দিন রাত ১টার সময় ভুক্তভোগী পরিবারকে মুঠো ফোনে অপহরণের বিষয়টি জানায় অপহরণকারীরা। প্রথমে ১২ ঘণ্টার মধ্যেই ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরদিন দুপুরে ৩ লাখ টাকা দিতে রাজি হয় মিলনের পরিবার। এরপর চক্রটি ৫ লাখ দাবি করে। পরদিন বেড়ে ১০ লাখে দাঁড়ায়। তিন দিন পরে ১৫ লাখ চায় চক্রটি। সবশেষে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করলে ৯ মার্চ রাতে মুক্তিপণের ২৫ লাখ টাকা অপহরণকারী চক্রের কাছে বুঝিয়ে দেয় অপহৃত মিলনের বাবা পানজাব আলী। ঠাকুরগাঁও পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মামুনুর রশিদ বলেন, মিলনকে অপহরণের ঘটনায় দুই যুবককে আটক করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে, সেজান আলীর বাড়ির পাশে একটি পরিত্যক্ত টয়লেটের নিচ থেকে মিলনের গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়।