ঢাকা শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫, ৮ চৈত্র ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সন্ত্রাসীদের গুলিতে লবণ চাষি নিহত

সন্ত্রাসীদের গুলিতে লবণ চাষি নিহত

কক্সবাজারের মহেশখালীতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে শফি আলম নামে এক লবণ চাষি নিহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে মহেশখালী থানার ওসি কাইছার হামিদ জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নের ছিকনিপাড়ার পশ্চিমে পদ্মবর চঁড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। তবে নিহত শফিউল আলম লবণ চাষি বলে দাবি করেছেন তার বড় ভাই মনিরুল আলম। ঘটনার পর পুরো এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। নিহত মোহাম্মদ শফি আলম চিকনীপাড়ার বাসিন্দা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কালারমারছড়ায় একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে তৎপরতা চালাচ্ছে-এমন তথ্যের ভিত্তিতে ওই এলাকায় কোস্ট গার্ড সদস্যরা অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় কোস্ট গার্ডের ধাওয়ায় সন্ত্রাসীরা পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু পালানোর সময় তারা সন্দেহজনকভাবে লবণ চাষি শফিকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। গুলিটি তার বুকে বিদ্ধ হলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। স্থানীয়দের দাবি, শফিল কোনো ভাবেই সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না। তিনি একজন নিরীহ লবণ চাষি। তাদের ধারণা, পূর্ব শত্রুতার জেরে সন্ত্রাসীরা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।

নিহতের ভাই মুহাম্মদ রাসেল বলেন, আমি আর আমার ভাই শফি লবণ মাঠে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ দেখি কোস্ট গার্ড সদস্যরা কালারমারছড়ার একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে ধাওয়া করছে।

তখন আমরা নিরাপদে থাকার চেষ্টা করি। কিন্তু আমার ভাই পদ্মবর চঁড়ায় পৌঁছাতেই সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা তাকে টার্গেট করে গুলি ছোড়ে। আমি আমার ভাইয়ের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। রাসেল আরো বলেন, আমি প্রশাসনের কাছে আমার ভাইয়ের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানাচ্ছি। এদিকে শফি হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই পুরো এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মুহাম্মদ হামিদ বলেন, শফি খুবই সহজ-সরল মানুষ ছিলেন। তার কোনো শত্রু ছিল না। অথচ সন্ত্রাসীরা তাকে হত্যা করল। এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়, বরং পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। আমরা চাই- প্রশাসন দ্রুত অপরাধীদের চিহ্নিত করে কঠোর ব্যবস্থা নিক। স্থানীয় এক লবণ চাষি বলেন, মহেশখালীর অনেক জায়গায় সন্ত্রাসীরা আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছে। সাধারণ মানুষ দিনদিন আতঙ্কের মধ্যে বসবাস করছে। লবণ চাষিরা মাঠে যেতে ভয় পাচ্ছে।

এ ঘটনায় মহেশখালী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার এএসপি মানবেন্দ্র সরকার বলেন, ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে এটি সন্ত্রাসী হামলা বলে মনে হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন ও আরও তদন্ত শেষে প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

তিনি বলেন, এ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। সন্ত্রাসীদের কোনো ভাবেই ছাড় দেয়া হবে না। সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে যারা এলাকায় অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে চায়, তাদের কঠোর হস্তে দমন করা হবে। মহেশখালী থানার ওসি কাইছার হামিদ জানান, শফি হত্যার ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত