ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত পাদুকা কারিগররা

প্রকাশ : ২৫ মার্চ ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মো. আল আমিন টিটু, ভৈরব

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে দেশীয় পাদুকা শিল্পের কারিগররা ব্যস্ত সময় পাড় করছেন। হাতে আর সময়ে নেই, তাই ঈদকে সামনে রেখে বাড়তি আয়ের আশায় নাওয়া খাওয়া ভুলে কাজ করে যাচ্ছেন তারা। তাছাড়াও গত বারের তুলনায় এবার বেচা-কেনা ভাল হওয়া খুশি এ শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা। জানাগেছে, রাজধানীর পরেই দেশের ব্যবসা বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিচিত ভৈরবে গড়ে উঠেছে পাদুকার বৃহত্তম বাজার। ফলে এখানে রয়েছে ছোট বড় মিলে ৫ হাজারের অধিক কারখানা। এ সব কারখানায় দেড় লক্ষাধিক শ্রমিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। দেশীয় এই শিল্পে কারিগররা এক সময় সনাতন পদ্ধতিতে পাদুকা তৈরি করলেও বর্তমানে লেগেছে আধুনিকতার ছোয়া। ফলে একদিকে যেমন যন্ত্রের মাধ্যমে কারখানাগুলোতে টেকসই ও উন্নতমানের পাদুকা উৎপাদন করা হচ্ছে। তেমনি অন্যদিকে উৎপাদিত এসব পাদুকা দেশের চাহিদা মেটিয়েও এশিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের ৫টি দেশ সৌদি আরব, কুয়েত, দুবাই, ব্রুনাই ও নেপালে রপ্তানির করে প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের মাধ্যমে অধিক পরিমাণে লাভবান হচ্ছেন কারখানার মালিকরা।

এছাড়াও প্রায় অর্ধশত কারখনায় আধুনিক মেশিনের সাহায্যে দেশ ও বিদেশের নামী-দামি ব্র্যান্ডের পাদুকা উৎপাদন করা হচ্ছে। এ সব ব্যান্ডের মধ্যে রয়েছে, এপেক্স, বাটা, লট্টু, স্টেপ, ওয়ারকার, সম্রাট, আজাদ, লিবার্টি ও পায়ে পায়ে সুসহ জাতীয় পর্যায়ের ৩০টি ব্র্যান্ডের পাদুকা। ফলে দেশীয় পাদুকা শিল্পে দুর্দিনের বদলে বইছে সুদিনের হাওয়া। আর এ সব পাদুকা দেশের চাহিদা মেঠিয়ে বিদেশে রপ্তানি করে জাতীয় অর্থনীতিতে রাখছে এক গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা। তবে, মেশিনে তৈরি পাদুকার পাশাপাশি হাতের তৈরি পাদুকার চাহিদা ছিল বেশ। ফলে সময় মত বেতন পেয়ে খুশি শ্রমিকরাও।

এদিকে এই শহরে উৎপাদিত পাদুকা বিক্রির জন্য গড়ে উঠেছে কয়েকটি পাইকারি পাদুকা মার্কেট। এ সব মার্কটে গত বারের তুলনায় এবার আশানুরূপ বেচা-কেনা করতে পারায় খুশি পাদুকা ব্যবসায়ীরা। বেচা-কেনা কেমন হয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা ফোর স্টার সুজের সত্তাধিকারী হাজী মো. নোমান মোল্লা বলেন, আলহামদুলিল্লাহ গত বছরের তুলনায় এবার অনেক ভাল বেচা-কেনা হয়েছে। এছাড়াও ফ্যশন সুজের মালিক মো. আফজল হোসেন জানান, মেশিন তৈরি পাদুকার পাশাপাশি এবার হাতের তৈরি পাদুকার চাহিদাও ছিল বেশ। ফলে এবার আশানুরূপ বেচা-কেনাও হয়েছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ভৈরব পদকা কারখানা মালিক সমিতির সভাপতি মো. আল আমিন মিয়া বলেন, দেশীয় এই পাদুকা শিল্প দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও সরকারের নানা সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত আমরা। যদি সরকারের পক্ষ থেকে প্রণোদনাসহ পাদুকা ব্যবসায়ীদের জন্য সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করা হতো, তাহলে এই শিল্পটি এগিয়ে যাবে আরও বহুদূর।