জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে দই ও মিষ্টির ওজনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ উঠেছে। প্রতি কেজি মিষ্টির খালি প্যাকেটের ওজন ১৫০ গ্রাম থেকে ২৪২ গ্রাম। এদিকে দইয়ের পাত্রসহ ওজন দিয়ে ঠকানো হচ্ছে ক্রেতাদের। এতে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন সাধারণ ক্রেতারা। এছাড়া কারখানাগুলোতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে দই ও মিষ্টি। সরিষাবাড়ী উপজেলার বেশ কিছু মিষ্টির দোকান ঘুরে দেখা যায়, কিছু কিছু মিষ্টির দোকানে মূল্য তালিকায় মূল্য লেখা থাকলেও তা না মেনে মোটা মার্কার কলম দিয়ে পূর্বের দাম কেটে নতুন করে মূল্য দিয়ে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করা হচ্ছে দই ও মিষ্টি। আসন্ন ঈদ উপলক্ষে দুধ ও চিনির দাম বাড়তির অজুহাতে নিজেদের ইচ্ছে মতো দই ও মিষ্টির দাম বাড়িয়েছে দোকান মালিকরা। দাম বাড়িয়ে প্রতি কেজি মিষ্টি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা, আর দই প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরে। আর এসব মিষ্টি বিক্রি করতে ক্রেতাকে ধরিয়ে দেয়া হয় ১৫০ থেকে ২৪২ গ্রাম ওজনের প্যাকেট। এদিকে কাগজে কলমে সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী ১ কেজি মিষ্টির প্যাকেটের ওজন থাকার কথা ৪০ থেকে ৫০ গ্রাম ও ২ কেজি প্যাকেটের ওজন থাকার কথা ৬০ গ্রাম, সেই হিসাবে ক্রেতার কাছ থেকে একটি প্যাকেটের দাম হিসেবে রেখে দেয়া হচ্ছে প্রকার ভেদে ৭০ থেকে ৯০ টাকা। দই এর পাত্রের ওজন বাদ দিয়ে মেপে দেয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে তার উল্টো।
দই এর পাত্রসহ ওজন দিয়ে ঠকানো হচ্ছে ক্রেতাদের। দইয়ের পাত্রে তৈরি ও মেয়াদ উত্তীর্ণ তারিখ সহ লেবেল লাগানোর কথা থাকলেও একটিতেও খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যে এমন প্রতারণা করলেও কোন তদারকি বা ব্যবস্থা নেয়নি উপজেলা প্রশাসন। এ সব মিষ্টির কার্টনের ওপরের কভার হালকা থাকলেও নিচেরটা ভারি। দোকান গুলোতে ক্রেতারা মিষ্টি কিনতে গেলে মিষ্টির প্যাকেট বা কার্টনসহ মিষ্টি ওজন করা হয়। এতে ক্রেতারা ১ কেজি মিষ্টি কিনলেও প্রকৃতপক্ষে পান ৭৫০ থেকে ৮৫০ গ্রাম।
এদিকে ডিজিটাল পরিমাপের যন্ত্রে মিষ্টির ওজনের সঙ্গে মিষ্টির কার্টনও ওজন দেয়া হয়। প্রতিটি মিষ্টির দোকানে ওজনে কারচুপি প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে। মিষ্টির কয়েকটি কারখানা ঘুরে দেখা যায়, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খালি গায়ে ময়লা শরীরে মিষ্টি, দই তৈরি করছেন কারিগররা। ময়লা ও মাছিতে ভরা কারখানা গুলো। পৌর শহর ও ইউনিয়নের বাজারগুলোতে প্রায় ২ শতাধিক মিষ্টির দোকান রয়েছে।
এই ওজন নিয়ে প্রায়ই ক্রেতাদের সঙ্গে দোকান মালিকদের বাগবিতন্ডা হচ্ছে। মিষ্টি ক্রেতা রনি আহমেদ বলেন, সেদিন রাতে আমি দেড় কেজি মিষ্টি কিনতে যাই ষোষ মিষ্টির দোকানে। পরে মিষ্টি মেপে দিলে আমার কাছে মিষ্টি দেখতে কম মনে হয়।
এ সময় আমি দোকানে থাকা মিষ্টির অন্য খালী একটি প্যাকেট ওজন দিলে একটার ওজন ২৩৮ গ্রাম ও অন্য আর একটি ওজন দিলে ২৪২ গ্রাম দেখতে পাই। পরে বিষয়টি দোকানদারকে জানালে সে মাফ চায়। রাশেদুল ইসলাম নামে একজন ক্রেতা বলেন, দোকানে মূল্য তালিকা থাকলেও দোকানের মালিকরা ইচ্ছামাফিক দই মিষ্টির দাম নিচ্ছেন।