বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দাগনভূঞাসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে গ্রুপিং, হামলা-মামলা ও সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রায়ই সংবাদ প্রকাশিত হচেছ। বিএনপি নেতাকর্মীদের এ ধরনের নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে অস্বস্তিতে আছেন ফেনী জেলা বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা। এছাড়া বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দখল, চাঁদাবাজি, ফসলি জমির মাটি বিক্রি, নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও টেন্ডারবাজির অভিযোগ রয়েছে। অনেক এলাকায় সরকারি জায়গা দখল ও ফুটপাত দখল করে চাঁদাবাজিতে জড়িয়েছেন বিএনপির নেতাকর্মীদের একটি অংশ। অনেকে ভোল পাল্টিয়ে নতুনভাবে ভাগাভাগিতে ব্যস্ত তারা।
গত ৬ মাসে আধিপত্য বিস্তার করতে গিয়ে সোনাগাজী, পরশুরাম, দাগনভূঞা, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়ায় বিএনপির দুইগ্রুপে সংঘর্ষে প্রায় শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে দলীয় একটি সূত্র দাবি করে। দাগনভূঞায় বেশ কয়েকটি ইফতার মাহফিলেও হামলা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সময়মতো সঞ্চিত টাকা না পেয়ে ব্যাংক কর্মকর্তার ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে ফেনী জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি রিয়াদ উল করিমের বিরুদ্ধে। ফেনীর চারটি উপজেলার সঙ্গে ভারতীয় সীমান্ত পথে অবৈধভাবে চোরাই পথে মাদক ও চোরাচালান বৃদ্ধি পেয়েছে। ফেনীর ৩টি নদী থেকে অবৈধভাবে ভ্রাম্যমাণ ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে দিনে-রাতে শতাধিক স্থান থেকে প্রভাবশালী কয়েকজন নেতা মিলে বালু উত্তোলন করে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। সোনাগাজী ও দাগনভূঞায় আহ্বায়ক কমিটিকে কেন্দ্র করে দুইগ্রুপের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। এসময় অন্তত ৩০ জন আহত হন। অবৈধ বালু নিয়ে সংবাদ করার জেরে যুবদল নেতার নেতৃত্বে দৈনিক ইনকিলাবের ফেনী প্রতিনিধি ওমর ফারুকের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া ২২ মার্চ দাগনভূঞা উপজেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফুল হাসান জাবেদের বসতঘর থেকে দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, ককটেল তৈরির সরঞ্জাম, মাদক সেবনের সরঞ্জাম ও ২ রাউন্ড বুলেট উদ্ধার করেছে যৌথবাহিনী। গত ৫ আগস্টের পর বিএনপি নেতাকর্মীদের একাংশ জেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যাপকভাবে চাঁদাবাজি, দখলবাজিতে জড়িয়ে পড়েছে। প্রতিদিনই বিভিন্ন জায়গায় ঘটেছে সংঘর্ষের ঘটনাও। এসব ঘটনায় ক্ষুন্ন হচ্ছে দলের ভাবমূর্তি। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ, চাঁদাবাজি-দখলবাজির অভিযোগ, সংঘর্ষে জড়ানোসহ বিভিন্ন কারণে উচ্চ পর্যায় থেকে তৃণমূল পর্যন্ত সব শ্রেণির নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে কমবেশি সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়েছে বিএনপি। অনেকের শাস্তি নির্দিষ্ট সময় পর তুলেও নেয়া হয়েছে। বিএনপিতে শুধু চাঁদাবাজ নয়, কোনো অপরাধীরই স্থান নেই, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এমন বক্তব্য প্রতিনিয়ত শোনা গেলেও তৃনমূল পর্যায়ে তার বাস্তবায়ন কম। গত সপ্তাহে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ বাহারের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলালের পরিচালনায় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।