কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে হাইব্রিড ও উচ্চ ফলনশীল জাতের তুলার চাষ সম্প্রসারিত হওয়ায় তুলার ফলনও বৃদ্ধি পেয়েছে। তুলা লাভজনক অর্থকরী ফসল হওয়ায় তুলার বাজারমূল্যও বৃদ্ধি পেয়েছে। এবছর বৈরী আবহাওয়ার কারণে তুলার উৎপাদন খরচ কিছুটা বেশি হলেও দাম ভালো পাওয়ায় প্রতিবছরই তুলা চাষে আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের। তবে তুলা চাষ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে চাষিদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি উন্নত জাতের বীজ সরবরাহ ও ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা।
তুলা উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, জেলার সীমান্তবর্তী দৌলতপুর উপজেলায় ২ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ও উচ্চ ফলনশীল জাতের তুলার চাষ হয়েছে। তবে চলতি মৌসুমে তুলা চাষে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে তুলা গাছ থেকে ফুল ও ফল ঝরে যাওয়ায় আশানুরূপ সুবিধা করতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন চাষিরা। উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের বিলগাতুয়া গ্রামের তুলাচাষি জাহাঙ্গীর আলম জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছরে চাষিরা কিছুটা হলেও লাভের মুখ দেখছেন। এর কারণ বৈরী আবহাওয়া ফলন হয়েছে।
উপজেলার আদাবড়িয়া ইউনিয়নের ধর্মদহ গ্রামের তুলাচাষি রেজাউল ইসলাম জানান, প্রতি বিঘা জমিতে তুলা চাষে খরচ হচ্ছে ১০ হাজার টাকা থেকে ১২ হাজার টাকা। প্রতি বিঘা জমিতে তুলার ফলন হবে ৮ মণ থেকে ১০ মণ। এবছর তুলার মিল মালিকরা এ-গ্রেডের প্রতিমণ তুলা ৪ হাজার ৫০০ টাকা এবং বি-গ্রেডের তুলা ৪ হাজার ১০০ টাকা দরে ক্রয় করছেন।
৮ মাস থেকে ৯ মাসের ফসল হিসেবে সময় অনুপাতে ভালো লাভ হচ্ছে বলে চাষিদের দাবি। আগামীতে লোকসান কমাতে প্রতিমণ তুলা ৪ হাজার ৬০০ টাকা থেকে ৪ হাজার ৮০০ টাকা নির্ধারণ করার দাবি জানিয়েছেন চাষিরা। আল মদিনা তুলা কারখানার মালিক গোলাম সাব্বির জানান, আন্তর্জাতিক বাজার সমন্বয় করে তুলার ময়েশ্চার ১-১৪ হলে এ-গ্রেড এবং ১৫-১৮ ময়েশ্চার হলে বি-গ্রেড করে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এবছরে তুলা ক্রয় করা হচ্ছে এ-গ্রেড প্রতিমণ ৪ হাজার ৫০০ টাকা এবং বি-গ্রেড ৪ হাজার ১০০ টাকা দরে।
কুষ্টিয়া তুলা উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান কর্মকর্তা কৃষিবিদ শেখ আল মামুন বলেন, গত মৌসুমের তুলনায় এবছর তুলার চাষ বেড়েছে। আগামী মৌসুমে চাষিদের প্রণোদনার ব্যবস্থা করা হবে। তিনি আরো বলেন, প্রতিনিয়ত চাষিদের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। এবছর দৌলতপুর উপজেলায় ২ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে তুলার চাষ হয়েছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে চাষিরা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। চাষিদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি বীজ নির্ধারণ, বীজতলা রোগমুক্ত রাখতে চাষিদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হয় বলেও জানান কৃষিবিদ শেখ আল মামুন। হাইব্রিড জাতের উচ্চ ফলনশীল তুলা চাষে চাষিদের আগ্রহী করতে তুলার ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে হবে। ফলে বাড়বে তুলা চাষ ও চাষির সংখ্যা। আর এমনটাই মনে করেন তুলা চাষে জড়িতরা।