জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সাবেকুন নাহার শিখার উদ্যোগে আয়োজন করা ইফতার মাহফিলে হামলা করে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে পাঁচবিবি উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম ডালিম ও দলটির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। একইসঙ্গে রান্নার জন্য আনা জিনিসপত্রসহ ৬টি গরু লুট করার অভিযোগও তোলা হয়েছে।
গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে পাঁচবিবি পৌর শহরের দানেজপুর মাঠে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর তিনজনের নাম উল্লেখসহ ১৫০-২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে থানায় মামলা করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পাঁচবিবি উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান সাবেকুন নাহার শিখা গতকাল পাঁচবিবি ডিগ্রি কলেজ মাঠে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেন। সেখানে গতকাল কয়েক হাজার লোকের উপস্থিত হওয়ার কথা ছিল। সাবেকুন নাহার শিখা একটি মামলার আসামি হওয়ায় তাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে গত শুক্রবার রাতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। বিক্ষোভ মিছিলটি পাঁচবিবি বিএনপির দলীয় কার্যালয় হতে শুরু হয়ে পাঁচবিবি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ডিগ্রী কলেজ মাঠ এলাকায় যায়। এ সময় মিছিলে থাকা লোকজন ওই মাঠের প্যান্ডেল, চেয়ার-টেবিল ভাঙচুরসহ ডেকোরেটরের জিনিসপত্র ভাঙচুর করেন। পরে সেখানে কিছু চেয়ার ও কাপড়ে আগুন দেয়া হয়। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সাবেকুন নাহার শিখা অভিযোগ করে বলেন, মোট ৬টি গরু ছিল। এরমধ্যে একটি গরু জবাই করা ছিল। যারা আসছিল তারা গরুগুলো ভ্যানে করে নিয়ে গেছে এবং মাংস পর্যন্ত নিয়ে গেছে। তাছাড়া মসলাসহ যাবতীয় জিনিসপত্র তারা নিয়ে গেছে। এখানে উপজেলা বিএনপির ডালিম নেতৃত্বে ছিল, তার সাথে ছাত্রদল ও অন্যরা ছিল। তারা আমাকে প্রতিপক্ষ মনে করে এমনটা করেছে। এ ঘটনায় থানায় এজাহার দেয়া হয়েছে। থানায় দেয়া এজাহারে বাদী হয়েছেন সোহেল রানা নামের একজন। এহাজারে তিনি উল্লেখ করেছেন, শনিবার সন্ধ্যায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা উপলক্ষে ইফতারের আয়োজন করা হয়। সেখানে ডেকোরেটর দিয়ে সাজানো হয়। খাবারের জন্য ৬টি গরু, ৬০০ কেজি চাল, ১৬০ কেজি তেল, নানা ধরনের মসলা আনা হয়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিএনপি নেতা ডালিমসহ আসামিরা মাঠে গিয়ে গালিগালাজ করে মাঠের ডেকোরেশনের জিনিস ভাঙচুর করেন। পরে আসামিরা খাবারের সকল জিনিস নিয়ে যায় এবং কিছু চেয়ার ও কাপড়ে আগুন দেয়। এতে ডেকিরেশনের প্রায় ১৫ লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়। এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম ডালিম বলেন, আমি যদি জড়িত থাকি, তাহলে তারা ছবি বা প্রমাণ দেখাক। তিনি মামলার আসামি, আগের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তার ছবি আছে। আর আমার নামে অভিযোগ কেউ দিতেই পারে, তবে তদন্তের ব্যাপার আছে। আমাকে রাজনৈতিকভাবে মান ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা করছেন। আর উনি সুবিধাবাদী, আওয়ামী লীগের দালাল। আগে আমাদের বিএনপি থেকে কেউ কোন নির্বাচনে অংশ নেয়নি কিন্তু উনি কোনো নির্বাচন বাদ দেননি, প্রার্থী হয়েছেন। পাঁচবিবি থানার ওসি মইনুল ইসলাম বলেন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সাবেকুন নাহার শিখার একটি ইফতার পার্টি ছিল। বিএনপির পক্ষ থেকে আপত্তি ছিল যে তিনি আওয়ামী লীগ সময়ের উপজেলা চেয়ারম্যান। পরে হঠাৎ করে সেখানে গিয়ে ভাঙচুর করে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। মামলায় তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১৫০-২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।