সবুজ কার্পেটের মতো বিছানো থোকা থোকা উঁচু-নিচু চা বাগান, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, কমলগঞ্জে বধ্যভূমি একাত্তর, শ্রীমঙ্গলের বিটিআরআই, কমলগঞ্জে মাধবপুর লেইক, কুলাউড়ার গাজীপুরের গগন টিলা, কালা পাহাড়, হাকালুকি হাওরের খোলা জায়গা, বিশাল বিশাল জল মহাল, বড়লেখার মাধবকুন্ড জলপ্রপাত সব জায়গায় হাজারো ভ্রমণপিপাসু মানুষের পদচারণা বেড়েছে। নির্মল প্রাকৃতিক পরিবেশে দর্শনার্থীরা ঘুরে বেড়িয়েছেন বন্ধু-বান্ধব ও পরিবার-পরিজন নিয়ে। এবারের ঈদে লম্বা ছুটি পাওয়া গেছে। তাই এই সুযোগটাকে কাজে লাগাতে দেশি বিদেশি হাজারো পর্যটকের সামাবেশে মুখর হয়ে ওঠে মৌলভীবাজারে সব পর্যটন কেন্দ্রেগুলো। ঢাকা থেকে আসা শাহীন আহমেদ বলেন, তিনি রাজধানীর উত্তরা থাকেন সব সময় জ্যাম, আর গাড়ির শব্দে যে অস্বস্তিকর পরিবেশে তাদের বসবাস করতে হয়। শ্রীমঙ্গলের প্রাকৃতিক পরিবেশে এসে নিমেষেই যেন সব ক্লান্তি দূর হয়ে গেছে।
তার স্ত্রী পাপিয়া জানান, বালিশিরার প্রাকৃতিক পরিবেশও তাকে দারুণ আকৃষ্ট করেছে। ঢাকায় ফিরে স্বস্তি খোঁজার জন্য যতটা পারেন চোখ দিয়ে মনের ভিতরে এই প্রকৃতির ছবি তুলে নিয়ে যাবেন। অন্য দর্শনার্থী রানী বেগম বলেন, বোন ও ভগ্নিপতির সঙ্গে শ্রীমঙ্গল বেড়াতে এসেছি। এখানে এসে চা বাগান দেখেছেন, লাউয়াছড়া বন দেখেছেন দুটাই সবুজ আর সবুজ। তার কাছে মনে হচ্ছে যেন তিনি ‘সবুজ সাগরে সাঁতার কাটছেন। কমলগঞ্জের বিভিন্ন প্রাকৃতিক পরিবেশে দর্শনার্থীরা ঘুরে বেড়িয়েছেন বন্ধু-বান্ধব নিয়ে। শ্রীমঙ্গলের উঁচু-নিচু পাহাড়, চা বাগান, খাসিয়াদের পান বাগান ঘুরে দেখছেন রাজশাহী থেকে আসা আজাদুর রহমান ঈদের আনন্দের সঙ্গে বারতি কিছু যোগ করতে তিনি স্ত্রী সন্তানসহ বেড়াতে এসেছেন। ঘুরে দেখেছেন শ্রীমঙ্গল বিটিআরআই ও খাসিয়া পুঞ্জিসহ বেশ কিছু এলাকা। মৌলভীবাজারের মাধবকুন্ড জলপ্রপাত এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ ঘুরে বেড়িয়েছেন। চা বাগানে হেঁটেছেন। শ্রীমঙ্গল সিতেশ বাবুর বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনে ঈদের সকাল ও বিকাল প্রচুর দর্শনার্থীর ভিড়। তরুণ ও যুবকরা মোটরসাইকেল নিয়ে ছুটেছে কুলাউড়ার হাকালুকির বিশাল খোলা পরিবেশে। জিসান ও রিয়াদ বলেন শুকনা মৌসুমে হাকালুকি অন্য রুপ দুচোখ ভরে দেখলাম। মৃদু বাতাসে মনপ্রাণ জুড়িয়ে গেলো। ঈদের দিন থেকেই পালের মোড়াতে কিশোর যুবক যুবতীরা বিকাল হতে রাত পর্যন্ত আড্ডা জমিয়ে আনন্দ উপভোগ করছে। এদিকে ঈদের দিন বড়লেখা মাধবকুন্ড জলপ্রপাত স্থানীয়দের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ায় হাজার হাজার লোকসমাগম ঘটে পাথারিয়া পাহাড় এলাকায়। এবারের ঈদের আনন্দটা ছিল একটু অন্যরকম। ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ছুঠে যান মাধবকুন্ড জলপ্রাপাতে। ?উঁচু টাওয়ারে বসে ঝর্ণার অপরুপ দৃশ্য দেখছেন অনেকে। দিনভর মাধবকুন্ড জলপ্রপাতসহ পুরো পাথারিয়া পাহাড়ি এলাকা ছিল লোকে লোকারণ্য। আর এই পর্যটকদের নিরাপত্তায় কড়া পাহারায় রয়েছে জেলায় নিয়জিত পর্যটন পুলিশ। শ্রীমঙ্গল পর্যটন পুলিশ জানান, জেলাব্যাপী তাদের পর্যটন পুলিশের টিম কাজ করছে। এছাড়া তাদের সহায়তার রয়েছে জেলার বিভিন্ন থানার পুলিশের সদস্যরা।