ঢাকা শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫, ২৮ চৈত্র ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ফেনীতে বিনোদনকেন্দ্রে দর্শনার্থীদের ভিড়

ফেনীতে বিনোদনকেন্দ্রে দর্শনার্থীদের ভিড়

ফেনীর বিভিন্ন বিনোদন স্পটে ভ্রমণপিপাসুদের বেশ ভিড় করছেন। জেলার আশপাশের লোকজনও এ সব বিনোদন স্পটে ভ্রমণ করে ঈদের আনন্দে মেতে ওঠেছে। ফেনীর ১৮ লাখ মানুষের বিনোদনের জন্য পরিকল্পিত বিনোদনস্পট খুবই সীমিত। পর্যাপ্ত তেমন কোনো স্থান না থাকায় জেলার ফেনী-পরশুরাম সড়কের পাশে চার দশমিক ৭৫ একর ভূমির ওপর সামাজিক বন বিভাগ ফেনী সদরের কাজীরবাগে নির্মিত ইকোপার্কটিতে শুক্রবার গিয়ে দর্শনার্থীদের ভীড় দেখা গেছে। এছাড়াও জেলা শহরের রাজারঝি দীঘির পাড়ের শিশু পার্ক, বিজয় সিংহ দীঘির পাড়, গোল্ডেন শিশু পার্ক, সোনাগাজীর মুহুরি প্রজেক্ট, ছাগলনাইয়ার বাঁশের কেল্লা, দাগনভূঞার প্রতাপপুর জমিদার বাড়ি ও পরশুরামের রাবার বাগানে বিনোদন প্রেমীরা নিজেদের ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে দিতে কিছুটা প্রশান্তির আশায় ঘুরতে যান।

ভ্রমণ পিপাসু সাহিত্যিক নুরুল আমিন হৃদয় বলেন, ফেনী জেলায় বিনোদন স্পট খুবই সীমিত। ফেনীর যোগাযোগ ব্যবস্থা সুবিধাজনক অবস্থায় থাকায় জেলার আশপাশের লোকজনও বিনোদনের জন্য আগমন করে। তাই পরিকল্পিত ভাবে আরো বিনোদন স্পট নির্মাণ করা প্রয়োজন। এতে জেলার অর্থনীতি গতি আরো সঞ্চারিত হবে। কাজিরবাগের ইকোপার্কটি সামাজিক বন বিভাগের বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের দুই কোটি টাকা অর্থায়নে এ পার্কটির নির্মাণকাজ ২০১৫ সালে শুরু হয়ে ২০১৮ এ শেষ হয়। এছাড়াও অন্য একটি প্রকল্পে ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ইকো পার্কের অভ্যন্তরে একটি দ্বিতল বিশ্রামাগার (রেস্ট হাউজ) স্থাপন করা হয়েছে।

সরেজমিনে ইকোপার্ক ঘুরে দেখা যায়, পার্কটিতে প্রবেশের পরই নজর কাটে ফুল বাগানের মনোরম দৃশ্য। এছাড়াও অভ্যন্তরীণ পাকা সড়ক, পথের পাশে ও বাগানের আশে পাশে বসে গল্প করার জন্য ২০টি বেঞ্চ, পার্কের ভেতরে দর্শনার্থী শিশুদের জন্য শিশু কর্ণার করা হয়েছে। সেখানে শিশুদের মেরী গো রাউন্ড (ঘুর্ণয়মান), স্লিপার, ঢেঁকি, দোলনা, ব্যাঙের ছাতাসহ আনন্দ উপভোগের নানা সুযোগ রয়েছে। এছাড়া পার্কের ভেতরেই দর্শনার্থীদের খাওয়ার জন্য রয়েছে একটি রেস্তোরা। পার্কের শেষপ্রান্তে চিড়িয়াখানার আদলে একটি কর্ণার করা হয়েছে। সেগুলোতে রয়েছে হরিণ, বানর, ময়ূর, খরগোশ, তিথির, টিয়া, কাকাতুয়া, টার্কি ও বনমোরগ। পার্কের মাঝখানে রয়েছে ম্যানগ্রোভ প্রজাতির আদর্শ বাগান, নার্সারি সেন্টার, বিভিন্ন বনজ, ফলজ, ওষুধি, বিরল ও বিলপ্ত প্রজাতির সমন্বয়ে একটি মিনি বোটানিক্যাল গার্ডেন এবং ফুলের বাগান। বিশ্রামাগারের সামনেই একটি সুদৃশ্য ফোয়ারা, পাশেই একটি পুকুর, পুকুরের চারপাশে চারটি পাকাঘাট, মাঝখানে একটি সুন্দর ফোয়ারা রয়েছে। পুকুরে ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য রয়েছে একটি সুন্দর নৌকা। এছাড়া রয়েছে প্রায় ৫০ ফুট উচু একটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার।

হুররে জান্নাত নামের এক দর্শনার্থী জানান, মনোরম পরিবেশে সব ধরনের বয়সের মানুষের জন্য পার্কটিতে দেখার নানা বিষয় রয়েছে। কিন্তু শিশুদের জন্য এখানে রাইড স্বল্পতা রয়েছে। তারপর ফেনীতে তেমন বিনোদন স্পট না থাকায় ঈদে কিছুটা মানসিক প্রশান্তির জন্য ঘুরতে এসেছেন। বন বিভাগের ফেনী সদর উপজেলা রেঞ্জার বাবুল জানায়, ইকোপার্কটি ২০১৯ সালের আগস্ট মাসে দর্শনার্থীদের জন্য উম্মুক্ত করা হয়। পার্কের উদ্বোধনী মাসে দর্শনার্থী থেকে এক লাখ ৬০ হাজার টাকা আয় হয়। নিরিবিলি প্রাকৃতিক পরিবেশে হওয়ায় দিন দিন পার্কে দর্শনার্থী বাড়ছে। তিনি আরও বলেন, গত ডিসেম্বর মাসে পার্কটির রাজস্ব আয় দুই লাখের বেশি এসে দাঁড়ায়। তার আগের বছরের পাঁচ মাসে প্রায় ১০ লাখ টাকা রাজস্ব আয় হয়। চলতি বছরের জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চে দর্শনার্থী ফি আদায় হয় প্রায় ৬ লাখ টাকা। পবিত্র ঈদুল ফিতরসহ বিভিন্ন উপলক্ষে দর্শনার্থীদের ভিড় বেশি দেখা যায়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত