ঢাকা শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫, ২৯ চৈত্র ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আলু নিয়ে বিপাকে চাষিরা

আলু নিয়ে বিপাকে চাষিরা

দিনাজপুরে আলু রাখার জায়গা নেই হিমাগারে বাজারে দাম নেই, হিমাগারে জায়গা নেই। এ অবস্থায় আলু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন দিনাজপুরের আলুচাষিরা। ফলন ভালো হলেও হিমাগারে জায়গা না পাওয়ায় বাধ্য হয়েই কম দামে আলু বিক্রি করে লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের। দিনাজপুরে এবার ১০ লাখ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হলেও জেলার ১৫টি হিমাগারে ধারণক্ষমতা মাত্র ১ লাখ ৫০ হাজার টন। ধারণক্ষমতা ফুরিয়ে যাওয়ায় এরই মধ্যে আলু বুকিং বন্ধ করে দিয়েছেন হিমাগার মালিকরা।

দিনাজপুরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা গেছে, গত কয়েক দিন আগে পাইকারী বাজারে ১০ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হলেও এখন তা নেমে এসেছে ৯ টাকায়। এতে উৎপাদন খরচও উঠছে না চাষিদের। দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার চাকাই গ্রামের আলুচাষি আনসারুল ইসলাম জানান, ১৫ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন তিনি। প্রতি বিঘাতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। আর প্রতি বিঘাতে আলুর ফলন হয়েছে ১০০ থেকে ১১০ মণ। গত কয়েক দিন আগে তিনি প্রতি কেজি আলু বিক্রি করেছেন সাড়ে ৯ টাকা দরে। এতে প্রতি বিঘাতে তার লোকসান হয়েছে প্রায় ১০ হাজার টাকা। একই উপজেলার কমরপুর গ্রামের আলুচাষি প্রমথ রায় জানান, ১০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করে প্রতি কেজি আলুর উৎপাদন খরচ হয়েছে ১০ টাকা ৪১ পয়সা। পাইকারী বাজারে দাম না থাকায় এবং আলু রাখার জায়গা না থাকায় তিনি প্রতিকেজি আলু বিক্রি করেছেন ৯ টাকা ১৫ পয়সা দরে। প্রতিকেজিতে তাকে লোকসান দিতে হয়েছে প্রায় দেড় টাকা। এতে ১০ বিঘা আলুর চাষ করে তাকে বিপুল পরিমাণ লোকসান দিতে হয়েছে।

একই কথা জানান, আলুচাষি বলরামসহ অন্যারা। জায়গা ও দাম না থাকায় অনেকেই মাঠে স্তূপকৃত আলু রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন। বীরগঞ্জ উপজেলার মেসার্স হিমাদ্রী হিমাগারের ম্যানেজার সাদেক আলী জানান, তাদের হিমাগারের ধারণক্ষমতা ৮ হাজার ৮০০ টন। এরই মধ্যে এই পরিমাণ আলু বুকিং হয়ে যাওয়ায় তাদের হিমাগারে আর কোনো জায়গা নেই। এ জন্য বুকিং বন্ধ করে দিয়েছেন তারা। বোচাগঞ্জ উপজেলার রাহবার হিমাগার প্রাইভেট লিমিটেডের ম্যানেজার শাহজাহান আলী জানান, তাদের হিমাগারের ধারণক্ষমতা ১০ হাজার ৮০ টন। এরই মধ্যে তা পূরণ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় প্রতিদিন আলুচাষিরা আলু রাখার জন্য এলেও আর নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এতে বাধ্য হয়েই আলুচাষিরা হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। কিন্তু করার কিছু নেই। দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. নুরুজ্জামান মিয়া জানান, দিনাজপুর জেলায় চলতি মৌসুমে ৪৮ হাজার ৫৭৮ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ করা হয়েছে। এতে ফলন হয়েছে প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন আলু।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত