চৈত্রের শেষ সময়ে কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলাজুড়ে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর দিনদিন নিচে নেমে যাওয়ায় বেশির ভাগ টিউবওয়েল ও পাম্প দিয়ে পানি উঠছে না। এছাড়া খাল-বিল, পুকুরসহ জলাশয় ভরাট হয়ে যাওয়া এর অন্যতম কারণ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একদিকে খাল-বিল ভরাট হয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে হাওরে সেচ দেয়ার জন্য অপরিকল্পিতভাবে শক্তিশালী সাবমারসিবল পাম্প স্থাপন করা হচ্ছে। এতে দিনদিন পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, তাড়াইল উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের বেশির ভাগ বাসাবাড়িতেই টিউবওয়েল ও পাম্প দিয়ে পানি উঠছে না। কোনো কোনো টিউবওয়েল বা মোটর দিয়ে পানি উঠলেও তা পর্যাপ্ত নয়। কোনো কোনো টিউবওয়েল দিয়ে মাসখানেক আগেই পানি ওঠা বন্ধ হয়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষ, বিশেষত গৃহিণীদের। দৈনিক কাজসহ শিশু-বয়স্কদের গোসল ও খাওয়ার পানি নিয়ে চরম বিপাকে পড়ছেন অভিভাবকরা। যেসব বাসাবাড়ির মোটর পাম্প অথবা টিউবওয়েলে পানি উঠছে সেখানে ভিড় করছে সাধারণ মানুষ। উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে একই অবস্থা। বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট গ্রামাঞ্চলেও।
সরেজমিনে উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় দেখা যায়, যেসব বাড়িতে মোটর কিংবা টিউবওয়েল দিয়ে পানি উঠছে, সেখানে পানি নেয়ার জন্য ভিড় করছে লোকজন। দামিহা পশ্চিম পাড়ার কাকন মিয়া ও দামিহা নয়া পাড়া গ্রামের নাসির উদ্দীন বলেন, ফাল্গুনের শুরু থেকেই আমাদের বাসার মোটর পাম্প দিয়ে পানি উঠছে না। পরিবারের সদস্য নিয়ে চরম বিপাকে আছি।
তারা আরও বলেন, পুরাতন মোটরে ফাল্গুনের শুরুতেই পানি ওঠা বন্ধ হয়ে যায়। প্রতি বছরই এমনটা হচ্ছে। গেছে রমজানে বিশুদ্ধ পানির জন্য ভুগতে হয়েছে। যদিও অনেকে মনে করছেন এ মৌসুমে এখন পর্যন্ত বৃষ্টি না হওয়ায় বিশুদ্ধ পানির সংকট তীব্র হয়েছে। উপজেলা সহকারী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী হাসিফুর রহমান নাদিম বলেন, যেসব এলাকায় পানি উঠছে না সেসব এলাকায় সরকারের পক্ষ থেকে গভীর নলকূপ স্থাপন করে দেয়া হচ্ছে। পানির স্তর ধীরে ধীরে নিচে নামার কারণেই এ সংকট। এ থেকে উত্তরণে ভূগর্ভস্থ পানির চাপ কমাতে হবে। পুকুর-খাল-বিল ও জলাশয় ভরাট করা যাবে না। অব্যাহত রাখতে হবে খনন কার্যক্রম।