পিরোজপুরের কাউখালীতে উপজেলার সন্ধ্যা নদীর নতুন করে ত্রিমুখী ভাঙনের মুখে পড়েছে আমরাজুড়ী ইউনিয়নের স্বরূপকাঠী-কাউখালী সড়ক সংযোগকারী ফেরিঘাট বাজার। এরই মধ্যে বাজারের কমপক্ষে ২০/২৫টি বিভিন্ন প্রকারের দোকান রাক্ষুসে নদী সন্ধ্যার মোহনায় বিলীন হয়ে গেছে। বছরখানেক আগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে কিছু জিও ব্যাগ দেয়া হলেও স্থায়ী কোনো সমাধান না হওয়ায় বর্তমানে ঝড়ের বেগে ভেঙে যাচ্ছে ফেরিঘাট এলাকার সড়ক, বাড়িঘর ও দোকানপাট। সরেজমিন দেখা যায়, নতুন করে ভাঙন শুরু হওয়ার ফলে আরো অনেক দোকান, বাড়িঘর, রাস্তা, মসজিদসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিলীন হয়ে গিয়েছে এবং ঝুঁকিতে রয়েছে। নদী ভাঙনের কারণে বহু বার ফেরিঘাট স্থানান্তর করা হয়েছে। এই ফেরিঘাট থেকে পিরোজপুর থেকে গড়িয়ার পাড় হয়ে বরিশাল-ঢাকা-বানারিপাড়া-নেছারাবাদণ্ডকাউখালী-পিরোজপুর-বাগেরহাটসহ খুলনা যাতায়াতের সহজ মাধ্যম। ফেরীঘাট বাজারের এলাকার মহিলা মেম্বার আকলিমা বেগম জানান, সন্ধ্যা নদীর সঙ্গে গাবখান চ্যানেলের সংযোগস্থল আমরাজুরী ফেরিঘাট। গাব খান চ্যানেল থেকে প্রতিদিন ঢাকা-মোংলা-চিটাগাং বন্দরে নৌপথে যাতায়াতের জন্য একমাত্র সংক্ষিপ্ত যোগাযোগের চ্যানেল এইটি। এই চ্যানেল দিয়ে দৈনিক হাজার হাজার ছোট-বড় মালবাহী জাহাজ চলাচল করার ফলে ভাঙনের তীব্রতা বেড়ে যায়। যার ফলে এ ভাঙনের মুখে পরে এলাকাবাসী শেষ সম্বল টুকু হারাচ্ছে। স্থায়ী বাধ নির্মানে কার্যকর কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় রোধ করা যাচ্ছেনা ভাঙন। করুন দৃষ্টিতে নিজেদের সর্বনাশ দেখছে অসহায় ভুক্তভোগীরা। অবিলম্বে যদি স্থায়ী ও টেকসই বেরিবাঁধ না করা হয় তাহলে আমরাজুড়ী ইউনিয়নের বিরাট একটি অংশসহ কাউখালী-শেখেরহাট সংযোগ সড়কটি কাউখালীর অংশ বিলীন হয়ে যাবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড, উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয়রা নানা কৌশলে ভাঙন রোধ করার চেষ্টা করলেও নদীর গভীরতা অনেক বেশি হওয়ায় কার্যকারিতা হচ্ছে না। বর্তমানে ফেরিঘাট বাজারটি খুবই ভয়াবহ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এলাকাবাসী নিজেরা বহুবার নিজেদের চাঁদার মাধ্যমে নদী ভাঙন রোধের পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও কার্যকরী কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি। এলাকাবাসী জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বহুবার জানানো সত্বেও তারা জোরালো কোনো ভূমিকা নিচ্ছে না। এরই মধ্যে ফেরিঘাট জামে মসজিদটি নদীতে ভেঙে যাওয়ার কারণে এলাকার মুসল্লীরা নামাজ পড়তে অনেক দূরে যেতে হচ্ছে। ভাঙন রোধে দ্রুত পদক্ষেপ না নেয়া হলে বাজার ও ফেরীঘাট রক্ষা করা সম্ভব হবে না। এখনই পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে যে কোনো সময় ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।