ভোলার চরফ্যাশনের ওমরপুর ইউনিয়নের ছাদেক মিয়া নিজের জমিতে বারি মুগ-৬ চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন। প্রথমবারের মতো তিনি নিজের ৪ বিঘা জমিতে বারি মুগ-৬ চাষ করেন। উচ্চ ফলনশীল এসব বীজে ফলন বেশি। উৎপাদন খরচ কম এবং চাহিদাও ব্যাপক হওয়ায় উপজেলায় দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এ মুগ ডাল চাষ। এ বছর মুগ ডালের বাম্পার ফলন ভালো হওয়ায় হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে। লবনাক্ততার জন্য পতিত থাকা জমিতে বারি মুগ-৬ ডালের চাষ করছেন স্থানীয় কৃষকরা। বারি মুগ-৬ জাতের ডালের চাহিদা থাকায় এর আবাদ সম্প্রসারণ বেশি হয়েছে এ উপজেলায়। ফলন আসার পরে ৩ ধাপে মুগ ডাল উত্তোলন করতে পারেন ডাল চাষিরা। মুগ ডাল উত্তোলনে পুরুষদের পাশাপাশি শ্রম দিচ্ছেন নারী সদস্যরাও। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত মাঠ থেকে মুগ তোলেন কৃষকরা। উৎপাদন ভালো এবং লাভ বেশি হওয়ায় নতুন নতুন কৃষি উদ্যোক্তরা আগ্রহী হচ্ছেন মুগ ডাল চাষে।
ছাদেক মিয়া জানান, এ বছর মুগ ডাল চাষ ভালো হয়েছে। তিনি ৪ বিঘা জমিতে বারি মুগ-৬ চাষ করে যার খরচ হয়েছে ষোল হাজার টাকার মতো। তিনি আশা করেন এ বছর প্রায় এক লাখ টাকার মতো লাভ করতে পারবেন। তিনি আরও বলেন, ডাল প্রক্রিয়াজাতকরণের মেশিনের মাধ্যমে ডাল মাড়াই, ডাল ভাঙানো, সব কাজই এই মেশিনের মাধ্যমে খুব সহজেই করতে পারেন। প্রযুক্তি থাকার ফলে শ্রমিক খরচ কম লাগে এবং সময় ও অর্থের অপচয় কম হয়।
ডাল চাষি জাহাঙ্গীর জানান, মুগডাল অত্যন্ত কম সময়ের ফসল। এই ডাল আবাদ করলে মাত্র দুই মাসের মধ্যে ফসল ঘরে তোলা যায়। ডাল ফসল শেকড়ের গুটির মাধ্যমে বায়ুমণ্ডলে নাইট্রোজেন আবদ্ধ করে মাটির উর্বরতা বাড়ায়। ফলে পরবর্তী বছরে জমিতে ইউরিয়া সারের পরিমান কম লাগে। উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. নাজমুল হুদা বলেন, কৃষকদের সঠিক পরামর্শ দেয়ায় উচ্চ ফলনশীল জাতের বারি মুগ-৬ এর বাম্পার ফলন হয়েছে। এ মুগে পোকার আক্রমণ হয় না। স্থানীয় জাতের তুলনায় বারি মুগ-৬ জাতে তিনগুণ বেশি ফলন পাওয়া যায়। মুগ ডাল তোলার পর মুগের গাছ ও পাতা মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিলে জমিতে জৈব সার তৈরি হয়। পরবর্তীতে ফসলের ভাল ফলন পাওয়া যায়। ডাল চাষে অন্য যে কোনো ফসলের তুলনায় সেচ ও সার কম প্রয়োগ করতে হয়। তাই মুগ ডাল চাষ করে কৃষক একদিকে যেমন পরিবারের পুষ্টির চাহিদা মেটাতে পারবে এবং বাজারে বিক্রি করে আর্থিকদিক দিয়ে লাভবান হতে পারবে।