শহরের প্রায় প্রতিটি বাড়ির ছাদে শোভা পাচ্ছে হরেক রকমের ফল ফলাদির গাছ। এযেন বিপন্ন প্রকৃতির মাঝে সবুজের বিপ্লব। পরিবেশবিদদের মতে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় প্রতিটি বাড়িতেই এমন পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিৎ। জানা গেছে, ২০১৬ সালে কুষ্টিয়ার সরকারি সেন্ট্রাল কলেজ শিক্ষক আজমল গনি আরজু (বর্তমানে অবসর) ও তার স্ত্রী কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রিজিয়া সুলতানা পপি শহরের হাসপাতাল মোড় এলাকায় তাদের নিজ বাড়ির ছাদের ওপর ফুলের আবাদ শুরু করেন। এক প্রকার শখের বশে বাড়ির আঙিনায় ফুলের আবাদ শুরু করলেও বর্তমানে এর পরিধি বেড়েছে অনেক। ৩ স্তরে বর্তমানে প্রায় শতাধিক রকমের ফলফলাদির আবাদ হচ্ছে।
ঘুরে দেখা গেছে, চারতলা বাড়ির শোবার ঘরের পাশেই খোলা বারান্দা। সেখানে টবে শোভা পাচ্ছে বেশ কয়েক প্রজাতির ফুল। তার মধ্যে মর্নিং গ্লোরি, বেলি, হাসনা হেনা, দোপাটি, হরেক রকমের ঘাস জাতীয় গাছ, চাইনিচ বাঁশ, বিভিন্ন রংএর গোলাপ দোলনচাপাসহ প্রায় ৫০ প্রকারের ফুল।
চারতলা বাড়ির মূল ছাদের চারপাশে করেছেন সবজির চাষ। তাতে রয়েছে লাউ, ঝিঙা, বাশের মাচায় ঝুলছে করলা, মরিচ, লতানো রয়েছে পুঁই শাক, গজে উঠেছে মুলা, ঢেঁড়স, গাছে ঝুলছে বেগুন। ওলকপি, ব্রকলি ও ফুলকপি লাগানো হয়েছে। চিলেকোটার ছাদের চারপাশে শোভা পাচ্ছে ফলদ গাছ। সেখানে আছে হাইব্রিড তেতুল। তাতে লেভনীয় জিভে জল আসা তেঁতুলও ধরে আছে। পাশেই আম, আমড়া ও কদবেলের গাছ। জাম্বুরা গাছে বড় আকারের একটা ফলও চোখে পড়লো। আম্রপলি আমসহ বারমাসি আমের গাছও রয়েছে। আছে সফেদা, জলপাই, মেওয়া, কামরাঙা, বাতাবি লেবু, মালটা, জামরুল, পেয়ারা।
শিক্ষক দম্পতি জানান, ভেজালের ভিড়ে সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যসম্মত দেশী প্রজাতির এসব ফলফলাদি নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে আত্মীয় স্বজনদের মাঝেও বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। মেশিনের সাহায্যে সেচ দেয়া থেকে শুরু করে সব কিছুই করেন নিজ হাতে। সবুজের মাঝে সময়টাও যেন কাটে বেশ। এই শিক্ষক দম্পতির ছাদের ওপর অক্সিজেনের এমন কারখানায় উদ্বুদ্ধ হচ্ছে আশপাশ এলাকার অনেক মানুষ। কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক সূফি রফিকুজ্জামান বলেন, নির্মল পরিবেশ আর স্বাস্থ্যসম্মত ফলফলাদি পেতে প্রতিটি বাড়ির ছাদে এমন ফলফলাদির আবাদের বিকল্প নেই।