ঢাকা সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

একটি সেতুর অভাবে ৫০ হাজার মানুষের দুর্ভোগ

একটি সেতুর অভাবে ৫০ হাজার মানুষের দুর্ভোগ

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে মরা পদ্মা নদীর ওপর একটি সেতুর অভাবে আজও খেয়া নৌকাই চরবাসীর একমাত্র ভরসা। শুষ্ক মৌসুমে সামান্য ঝড়ো হাওয়া কিংবা কচুরিপানার জটই বাধা হয়ে দাঁড়ায় পারাপারে। আর তাতেই হাজার হাজার মানুষের নিত্যদিনের জীবনে নেমে আসে দুর্ভোগ। একটি সেতু নির্মাণ হলে পাল্টে যেতে পারে গোয়ালন্দের বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলের কৃষি, শিক্ষা ও চিকিৎসাব্যবস্থাসহ সামগ্রিক অবস্থা।

ফরিদপুর জেলার সীমান্তঘেঁষা গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের দড়াপের ডাঙ্গী গ্রামটিকে ঘিরেই মূলত এই সমস্যার সূত্রপাত। পদ্মা পাড়ের এই চরাঞ্চল কৃষি উৎপাদনের জন্য আদর্শ হলেও পরিবহন সংকটে কৃষকরা ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হন। নদী পার হলেই রয়েছে স্কুল, মাদ্রাসাসহ নানা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কিন্তু একটি সেতুর অভাবে অসংখ্য শিশু-কিশোরের পড়াশোনায় বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নিতে ঘুরে যেতে হয় প্রায় ৭-৮ কিলোমিটার পথ। একটি সেতু নির্মিত হলে শুধু উজানচর নয়, পাশের দৌলতদিয়া ইউনিয়নসহ অন্তত ৫০ হাজার মানুষ সরাসরি উপকৃত হবেন।

ফরিদপুর শহরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন হবে জামতলার হাট, মমিনখার হাটসহ বিভিন্ন এলাকার। উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালে দড়াপের ডাঙ্গী এলাকায় ২৬০ মিটার দৈর্ঘ্যরে একটি সেতু নির্মাণের জন্য প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু এখনও তা অনুমোদন পায়নি। স্থানীয় কৃষক কামাল হোসেন বলেন, আমরা প্রচুর ফসল উৎপাদন করি। কিন্তু খেয়াঘাট দিয়ে মালামাল পারাপার করতে গিয়ে সময়, শ্রম ও অর্থ সবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেতুটি হলে আমাদের জীবন অনেক সহজ হতো। জামতলা দাখিল মাদ্রাসার ছাত্রী ইনসানা ও লামিয়া জানায়, প্রতিদিন খেয়া নৌকা পার হয়ে স্কুলে যেতে হয়। সময়মতো খেয়া না পেলে অনেক সময় ঘাটে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। আবার আবহাওয়া খারাপ হলে স্কুলেও যাওয়া যায় না। খেয়া ঘাটের মাঝি শাকিল শেখ বলেন, এলাকাবাসীর প্রয়োজনে আমাকে দিন-রাত খেয়া চালাতে হয়। সামান্য কচুরিপানায় নৌকা আটকে গেলে তা পরিষ্কার করে আবার চালু করতে হয়। সব জায়গায় সেতু হয়েছে, শুধু আমাদের এখানে হয়নি।

গোয়ালন্দ উপজেলা প্রকৌশলী ফয়সাল জাহাঙ্গীর স্বপ্নিল বলেন, আমি খোঁজ নিয়ে জেনেছি, সেতুটি অত্যন্ত জরুরি। প্রস্তাব পাঠানো হলেও এখনও অনুমোদন হয়নি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে পাস করানোর চেষ্টা করব। গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাহিদুর রহমান বলেন, চরবাসীর দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠানোসহ সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত