রাজবাড়ী জেলা কারাগারে বন্দিদের সঙ্গে দেখা করতে আসা দর্শনার্থীদের জন্য নির্ধারিত কোনো বসার ব্যবস্থা নেই। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রোদ, বৃষ্টি কিংবা ঝড়ের মধ্যেও দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হন তারা। বিশেষ করে বর্ষাকালে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হয়ে ওঠে। গত বৃহস্পতিবার জেলা কারাগারের মূল ফটকের সামনে দেখা যায়, প্রায় ২০ জন দর্শনার্থী ভেতরে থাকা স্বজনদের সঙ্গে দেখা করার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছেন। হঠাৎ শুরু হওয়া মুষলধারে বৃষ্টিতে কেউ পাশের দোকানে, কেউবা আশপাশের ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছেন।
রাজবাড়ী সদর উপজেলার বরলক্ষীপুর গ্রামের বাসিন্দা রমজান ফকির বলেন, ভাস্তে তিন মাস ধরে জেলে আছে। সকালে ৯টায় আসছি, অথচ এখন বলা হচ্ছে দেখা হবে দুপুর ১টার পর।
বসার জায়গা নাই, উপরে আবার বৃষ্টি। একদম ভিজে গেছি। ফরিদপুর থেকে আসা সুফিয়া বেগম বলেন, সকালে এসেছি ছেলের সঙ্গে দেখা করতে, কিন্তু এখনো দেখা হয়নি। বাইরে দাঁড়িয়েই থাকতে হচ্ছে। গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া থেকে আসা লতিফা আক্তার জানান, প্রতিমাসে স্বামীকে দেখতে আসি। ছেলেকেও সঙ্গে আনতে হয়। রোদণ্ডবৃষ্টিতে এখানে দাঁড়িয়ে থাকা যায় না।
এত কষ্ট লাগে! জানা গেছে, বর্তমানে রাজবাড়ী জেলা কারাগারে বন্দির সংখ্যা চার শতাধিক। কারাবিধি অনুযায়ী, গ্রীষ্মকালে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা এবং ১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত দর্শনার্থীরা সাক্ষাৎ করতে পারেন। কিন্তু এই সময়জুড়ে বসার বা আশ্রয়ের কোনো ব্যবস্থাই নেই। এ বিষয়ে রাজবাড়ী জেলা কারাগারের জেল সুপার মো. এনামুল কবির বলেন, দর্শনার্থীদের বসার জায়গা নেই এটা সত্যি। বিষয়টি গণপূর্ত বিভাগকে জানানো হয়েছে।
তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষিত এই সমস্যার কারণে ক্ষুব্ধ দর্শনার্থীরা বলছেন, প্রতিদিন শতাধিক মানুষ এখানে আসেন। বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও যদি একটি ছায়াযুক্ত বসার স্থান, শৌচাগার বা ন্যূনতম মানবিক সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা না থাকে, তাহলে প্রশ্ন ওঠে এই ব্যবস্থাপনা নিয়েই। দর্শনার্থীদের একটাই দাবি অবিলম্বে যেন মানবিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়।