১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী ধর্মদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টি ২০০২ সালে মাধ্যমিক পর্যায়ে (সেকেন্ডারি) এমপিওভুক্ত হয়। তবে প্রতিবছর কমবেশী এসএসসি পরীক্ষার্থী থাকলেও এবছর পরীক্ষার্থী না থাকার ঘটনায় এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্ট মহল হতবাক হয়েছেন। এসএসসি পরীক্ষার্থী না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে ধর্মদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুস্তম আলী জানান, এবার আমাদের বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষার জন্য ১৫ জন শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করেছিল। তবে দুঃখজনকভাবে তারা কেউই পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। আমরা অনেক চেষ্টা করেছি তাদের পরীক্ষায় বসানোর জন্য; কিন্তু তাতে সফল হইনি। তবে দীর্ঘ ২৩ বছর পার হলেও বিদ্যালয়টির অবকাঠামো ও শিক্ষার পরিবেশের কোনো উন্নতি হয়নি। বর্তমানে একটি জরাজীর্ণ ভবনে বিদ্যালয়টির পাঠদান কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ভাঙাচোরা বেঞ্চ, মানসম্পন্ন শ্রেণিকক্ষের অভাব এবং প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণের সংকটে পড়ালেখার পরিবেশ প্রতিনিয়ত ব্যহত হচ্ছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ খাতাণ্ডকলমে ২০০ শিক্ষার্থী দাবি করলেও শিক্ষার্থী সংখ্যা রয়েছে ১০০ জনেরও নিচে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। বিদ্যালয়ে শিক্ষকের সংখ্যা ১০ জন হলেও এদের অনেকেই নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী জানান, একটু বৃষ্টি হলে শ্রেণিকক্ষে পানি পড়ে, পাঠদান প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের বসার বেঞ্চ ভাঙা, জানালা-দরজা নেই বললেই চলে। মেঝেতে মাটি থাকায় বৃষ্টিতে কাদায় পরিণত হয়, আবার শুকনো মৌসুমে ধুলো-বালি জমে। শিক্ষকরাও নিয়মিত আসেন না, তেমন ক্লাসও হয় না।
অভিভাবকদেরও রয়েছে নানা অভিযোগ। তারা মনে করেন, বিদ্যালয়ের প্রতি প্রশাসনের নজরদারি নেই। শিক্ষকদের অনিয়মিত উপস্থিতি ও দুর্বল পাঠদানের কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষা গ্রহণের আগ্রহ হারিয়ে যাচ্ছে। এক অভিভাবক বলেন, আমরা গরিব মানুষ, ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাই ভবিষ্যতের আশায়।
কিন্তু স্কুলের অবস্থা এমন যে ওরা আর যেতে চায় না। আমি আমার মেয়েকে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি করিয়েছিলাম, পরে অন্য স্কুলে নিয়ে ভর্তি করেছি।