বগুড়ার গাবতলী, সারিয়াকান্দি ও সোনাতলা উপজেলার প্রায় ১০ লক্ষাধিক মানুষের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত ফতেহ আলী সেতুর নির্মাণকাজ প্রায় শেষের পথে। করতোয়া নদীর উপর নির্মিত এই নতুন দৃষ্টিনন্দন সেতুটি এরইমধ্যে পায়ে চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে, যা পূর্ব বগুড়ার মানুষের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি অনেকটাই কমিয়ে এনেছে। পূর্বে কয়েক কিলোমিটার ঘুরে শহরে প্রবেশ করতে হতো স্থানীয়দের। এতে করে সময় ও খরচ উভয়েরই অপচয় হতো। বর্তমানে শুধু মোটরসাইকেল চলাচল ছাড়া অন্য কোনো ভারী যানবাহন চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়নি। সড়ক ও জনপথ বিভাগ জানিয়েছে, সেতুর পূর্ণ নির্মাণকাজ ২০২৫ সালের জুন মাসের মধ্যে সম্পন্ন করে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে।
জানা গেছে, ২০২৩ সালের মে মাসে সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। এটি মূলত শহরের পূর্বপ্রান্ত ও পার্শ্ববর্তী তিন উপজেলার মানুষের চলাচল সহজতর করতেই নির্মাণ করা হচ্ছে। ১৯৬২ সালে নির্মিত পুরাতন ফতেহ আলী সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় ২০১৮ সালে সেটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে সড়ক বিভাগ। এরপর নতুন করে নির্মাণের জন্য সরকার ১৯ কোটি ৮৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় এবং পুরাতন সেতু ভেঙে নতুন নির্মাণ শুরু হয়। নতুন সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬৯ মিটার ও প্রস্থ ১২.৩ মিটার।
নির্মাণকাজ ২০২৪ সালের মে মাসে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নানা জটিলতায় তা সময়মতো শেষ হয়নি। তবে বর্তমানে নির্মাণকাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। সেতুর ফুটপাত, রেলিং এবং অ্যাপ্রোচ সড়কের কাজ এখনও চলমান। সেতুর উভয় পাশে এখনও পূর্ণাঙ্গ অ্যাপ্রোচ সড়ক তৈরি হয়নি।
অস্থায়ীভাবে বিটুমিন ও বালু ফেলে মানুষ পায়ে হেঁটে পারাপার করছেন। নির্মাণসামগ্রী সেতুর ওপরে রাখা হলেও মাঝখানে হেঁটে চলাচলের জন্য খোলা রাখা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা জাকির বলেন, আগে শহরে যেতে অনেক ঘুরে যেতে হতো। এখন সেতু দিয়ে সহজেই যাতায়াত করা যাচ্ছে, সময় ও খরচ দুই কমেছে। বগুড়া সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল মনসুর আহমেদ বলেন, মানুষের দুর্ভোগ কমাতে পায়ে চলাচলের জন্য সেতুটি খুলে দেওয়া হয়েছে। জুন মাসের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করে সেতুটি উদ্বোধন করা হবে।