রমজান আসছে

এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে

প্রকাশ : ০৬ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

বছর ঘুরে আবার আসছে পবিত্র রমজান। আর দুই মাস বাকি। মার্চ মাসেই রমজান শুরু হবে। রমজান মুসলমানদের একটি পবিত্র মাস। এই মাসে তারা রোজা পালন করেন। ধর্মীয় দিক থেকে এই রোজা পালন অবশ্য করণীয়, অর্থাৎ ফরজ। এই রমজান মাসে সিয়াম সাধনার মধ্যে সময়টি পার করেন ধর্মপ্রাণ মুসলমান। এই মাসটি শেষ হওয়ার পরই আসে আনন্দের দিন ঈদ। সারা মাস রোজা রেখে ঈদ পালনের মধ্যে আছে পরম আনন্দ এবং সৃষ্টিকর্তাকে খুশি করার চেষ্টা। তাই রমজান মাসটি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

প্রতি বছরই দেখা যায়, এই মাসটিতে নানা প্রয়োজনীয় দ্রব্যের অভাব দেখা দেয় এবং ব্যবসায়ীরা পণ্যমূল্যের দাম বাড়ানোর প্রতিযোগিতা শুরু করেন। প্রতি বছরই এ নিয়ে হইচই হয়। প্রশাসনও ধমক দেয়, দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করে; কিন্তু কিছুতেই কিছু হয় না। এই মাসটিতে এমনিতেই চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। সে সুযোগটাই নেন ব্যবসায়ীরা। মনে হয়, যেন সব ব্যবসায়ী এই মাসটির জন্যই অপেক্ষা করেন। কেউ কেউ বলে থাকেন, কোনো ব্যবসায়ী ৬ মাসে যে মুনাফা করতে পারেন না, এই রমজান অর্থাৎ এক মাসেই তার চেয়ে বেশি মুনাফা করে থাকেন। বিষয়টি কতটুকু সত্য, তা বিচার না করে আমরা যেটা উপলব্ধি করি তাতে তো তেমনটাই মনে হয়। যা হোক, রমজান মাস যে ব্যবসা ভালো হয়, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে এই ভালো জনগণকে ঠকিয়ে করতে হবে, তা সমর্থন করা যায় না। আমাদের প্রশ্ন, রমজান মাসে পণ্যের দাম বাড়বে কেন? এমনিতেই সারা বছরই কোনো না কোনো অজুহাতে পণ্যমূল্য বেড়েই চলেছে। তার ওপর যদি রমজান মাসেও বাড়ে, তাহলে সাধারণ মানুষের অবস্থা কী হবে, তা কি প্রশাসন বুঝতে পারে না? নাকি বুঝেও কিছু করতে পারে না। এমন পরিস্থিতি হতে পারে যদি যারা পণ্যমূল্য বাড়াবেন, তাদের চেয়ে যারা মূল্য নিয়ন্ত্রণ করবেন তারা দুর্বল হন। আসলে কি তারা সত্যিই দুর্বল? আমরা তা বিশ্বাস করি না। ব্যবসায়ীরা প্রশাসনের চেয়ে শক্তিশালী হতে পারে না। রমজান মাসে পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় দামও বাড়ে। কিন্তু হওয়া উচিত তার উল্টোটা। রমজান মাসে প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম অন্যান্য সময়ের চেয়ে কম হবে। সারা বছর ব্যবসায়ে মুনাফা করে অন্তত এই একটি মাসে না হয় মুনাফা একটু কমই হলো। এতে তো ক্ষতির কিছু নেই। আর এ জন্য ব্যবসায়ীদেরই এগিয়ে আসতে হবে। তাদের মনে করতে হবে, এই একটি মাস পণ্যমূল্য বৃদ্ধি না করাও একটি ইবাদত।

সরকারও রমজান মাসের জন্য আগাম প্রস্তুতি নেবে। যেহেতু এই সরকার জনমুখী, সেহেতু তারা এই মাসটিতে কিছু পণ্য ভর্তুকি দিতে পারে। হাজার হাজার কোটি টাকা বছরে বিভিন্ন খাতে ভর্তুকি দেয়া হয়। তারই একটি ক্ষুদ্র অংশ এই মাসটিতে দিতে পারলে তেমন কোনো অসুবিধা হবে না। আমরা আশা করি, প্রতি বছর রমজানে যে সমস্যা তৈরি হয়, এবার তা হবে না। সরকার আগে থেকেই যদি ব্যবসায়ীদের আয়ত্তে আনতে পারে, তাহলে এমনটি হওয়ার কথা নয়।

আমরা বিশ্বাস করি, গণবান্ধব এই সরকার ইতোমধ্যেই বাজার নিয়ন্ত্রণে কিছু সুফল দেখিয়েছে। আগামী রমজান মাসে তা আরও বেশি সফলতা প্রমাণ করতে পারবে। রমজান এলেই মানুষ যেমন আতঙ্কিত হয়ে পড়ে, এবার আর তেমন হবে না। স্বাভাবিক ও শান্তির সঙ্গেই আমরা আমাদের এই ইবাদতের মাসটি পার করতে পারব।