ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

জেলিফিস রক্ষায় পদক্ষেপ নিন

সাঈমা আক্তার
জেলিফিস রক্ষায় পদক্ষেপ নিন

জেলিফিশ এক ধরনের অমেরুণ্ডী প্রাণী যাদের পৃথিবীর সব মহাসাগরে দেখতে পাওয়া যায়। নামে ‘ফিশ’ হলেও এটি মাছ নয়; এর মেরুদণ্ড নেই। ঘণ্টাকৃতি জেলিসদৃশ প্রাণীটি প্রাণিজগতের নিডারিয়া পর্বের সিফোজোয়া শ্রেণির অন্তর্গত। জেলিটিন সমৃদ্ধ ছাতার মতো অংশ এবং ঝুলে পড়া কর্ষিকা- এ দুই অংশে প্রাণীটির দেহ গঠিত। অন্তত ৫০০০ কোটি বছর ধরে সাগরে এদের বাস। ঘণ্টাকৃতি জেলিসদৃশ প্রাণীটি প্রাণিজগতের নিডারিয়া পর্বের সিফোজোয়া শ্রেণির অন্তর্গত। ২০০৭ সালে সেটা থেকে খুঁজে পাওয়া যায় একটি জেলিফিশের ফসিল। এ প্রাণীটির শুরু ডাইনোসোরের চেয়ে আরও তিনগুণ আগে। পৃথিবীতে প্রায় ২ হাজার প্রজাতির জেলিফিশ আছে। জেলিফিশের দেহ জোনাকি পোকার মতো জ্বলজ্বল করে। কারণ এদের দেহের Green Fluorescent Protein (GFP)। এদের মুখ ও পায়ুপথ একই। প্রাণীটির উচ্চতাভীতি আছে। অসম্ভব সুন্দর এই প্রাণীটির মাথা ও হৃদয় বলতে কিছু নেই। এদের দেহের ৯৮ শতাংশই পানি দিয়ে গঠিত। জেলিফিশের শরীরের ভেতর থেকে সুতার মতো এক ধরনের অঙ্গ বের হয়, এগুলোকে টেন্টাকেলস বলে। টেন্টাকেলসে ‘নেমাটোসিস’ নামের একটি অঙ্গ থাকে, যার সাহায্যে এরা শিকার করে।

জেলিফিশের সব প্রজাতির মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর প্রজাতির জেলিফিশ হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ান বক্স জেলিফিশ। দেখতে এরা অনেকটা ঘনকের মতো। গায়ের রং স্বচ্ছ বলে এদের সহজে দেখাও যায় না। এই প্রজাতির জেলিফিশের আছে লম্বা কর্ষিকা, যা নেমাটোসিস্ট ও বিষ বহন করে। এদের হুলের আঘাত মাত্র চার মিনিটেই শিকারকে মেরে ফেলতে পারে, যা সাপের বিষকেও হার মানায়। এর বিষরোধক এখনও আবিষ্কৃত হয়নি। প্রতিটি বক্স জেলিফিশে ৬০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করার মতো পর্যাপ্ত পরিমাণ বিষ জমা থাকে। বিশ্বের বৃহত্তম জেলিফিশ লায়ন ম্যান জেলিফিশ। এরা প্রায় ১২০ ফুট পর্যন্ত প্রসারিত হতে পারে। তবে ওজন ও ব্যাসের দ্বারা বিশ্বের বৃহত্তম জেলিফিশ হলো টাইটানিক নোমুরার জেলিফিশ। এদের ওজন ৪৪০ পাউন্ড পর্যন্ত হতে পারে। মুন জিলিফিশের শরীরের মাঝখানে চির ধরে আবার জোড়া লেগে যায়। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, আবার টিস্যুগুলো জন্মায় আর আগের অবস্থায় ফিরে যায়। কখনোই বার্ধক্য আসে না ব্যাকওয়ার্ড এজিং জেলিফিশের। বয়সের ভারে এদের মৃত্যু হয় না। বয়সকে লুকিয়ে ফের যৌবনে ফিরে যাওয়ার অদ্ভুত ক্ষমতা রয়েছে এ প্রজাতির জেলিফিশের। সমুদ্রসৈকতের বেলাভূমে ভেসে আসছে হাজারো মৃত জেলিফিশ। আটকে থাকা জেলিফিশগুলো পচে-গলে দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করেছে। সমুদ্রসৈকতের প্রায় চার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে জেলিফিশগুলো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আটকে যাচ্ছে। জেলিফিশগুলো এখনই সংগ্রহ করে মাটি চাপা দেওয়ার উদ্যোগ না নিলে দুর্গন্ধে সৈকতের পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সাগরে জাল পাতলে ধরা পড়ছে জেলিফিশ। জলবায়ুর দ্রুত পরিবর্তনজনিত কারণে জেলিফিশের অভয়াশ্রম বাস অনুপযোগী হওয়ায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ছে। জেলফিস রক্ষা পদক্ষেপ নিতে হবে আর জেলফিস সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।

* শিক্ষার্থী

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা

আলোকিত বাংলাদেশ
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত