ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

চি ঠি প ত্র

আবারও ট্রেনের ভাড়া বৃদ্ধি

আবারও ট্রেনের ভাড়া বৃদ্ধি

সেবামূলক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রেলওয়ের অবস্থা বেহাল। তিক্ত অভিজ্ঞতায় বলতে পারি, ট্রেনের টিকিট অনলাইন বা কাউন্টারে না পেলেও স্টেশনের টং বা চা স্টলে অতিরিক্ত টাকায় টিকিট মিলবে। ট্রেনে টিকিট কালোবাজারি বা যাত্রাপথে অবিক্রীত সিটগুলো পূরণ করতে রেলওয়ের কর্মচারীদের দৌড়ঝাঁপে সাধারণ যাত্রীরা অতিষ্ঠ। এমনিতে ট্রেনে কোনো সেবা নেই, তারপরও এই দুর্দিনে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে চলাচলকারী বিরতিহীন আন্তঃনগর ট্রেন সুবর্ণ এক্সপ্রেসের ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে, যা অমানবিক। কর্তৃপক্ষের কি চমৎকার যুক্তি- দীর্ঘদিন থেকে সুবর্ণ এক্সপ্রেসের চেয়ে সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনের ভাড়া বেশি নেয়া হতো বলেই ভাড়া বাড়িয়ে তা সমন্বয় করা হয়েছে। অথচ দেশের সার্বিক উন্নয়নে রেলের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। ১৮৬২ সালের ১৫ নভেম্বর ব্রিটিশ আমলে এর জন্ম হলেও আজ অবধি এ প্রতিষ্ঠানটি লোকসানি খাত হিসেবে চিহ্নিত। অথচ দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নে রেলের গুরুত্ব অপরিসীম। চাহিদা অনুযায়ী বর্তমানে ট্রেনের বগির সংখ্যা আরও বাড়ানো দরকার। এরই মধ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ের পরিধি বাড়লেও দুর্নীতি কমেনি। ট্রেনে মাদক বহন ঠেকানো যায়নি। আগের মতো ট্রেনের টিকিট চেকিং হয় না। ট্রেনের অভ্যন্তরে টিকিটবিহীন যাত্রীদের হট্টগোলের জন্য সাধারণ যাত্রীরা অতিষ্ঠ। দেখার কেউ নেই। ট্রেনের অভ্যন্তরে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের নাস্তা তেলে ভরপুর এবং নিম্নমানের, যা কোনোভাবেই স্বাস্থ্যসম্মত নয়।

এরই মধ্যে সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনের শোভন শ্রেণির ৩৮০ টাকার ভাড়া নতুন করে ৪০৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। শীততাপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) কোচের ভাড়া ৬৩০ টাকার জায়গায় ৮০৫ টাকা তারপর ভ্যাট যুক্ত। ট্রেনটির স্নিগ্ধা এসি সিটের ভাড়া ৮০ টাকা এবং ননএসি টিকিট ভাড়া ২৫ টাকা বাড়ানো হয়েছে। বলাবাহুল্য, রেলওয়ের রাজস্বের অনেকাংশ রেলওয়ের কর্মচারীদের পকেটে যায়। বর্তমানে পদ্মা সেতু, নবনির্মিত বঙ্গবন্ধু সেতু, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ও ঢাকা-আগরতলা রুটসহ বিভিন্ন রেলওয়ের উন্নয়ন কাজের জন্য রেলওয়ের বাজেট বিশাল। আধুনিক এবং উন্নত রেলওয়ের জন্য যাত্রীসেবাই হচ্ছে প্রধান। এখনও বাংলাদেশ রেলওয়ে টিকিট বিক্রির পদ্ধতি সহজ এবং জনগণের চাহিদা পরিপূর্ণ করতে পারেনি। রেলওয়েকে দুর্নীতিমুক্ত করতে পারলে এর রাজস্ব অনেক গুণ বেড়ে যাবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। দেশের মানুষ আর্থিক দিক থেকে সাশ্রয়ী, নিশ্চিত ও নিরাপদ ভ্রমণের জন্য এবং যানজটের কবল থেকে রক্ষা পাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে রেল ভ্রমণ করতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে থাকে। এ ছাড়া তুলনামূলকভাবে রেলের ভ্রমণ বাসের চেয়ে আরামদায়ক। আশা করি, জনস্বার্থে ট্রেনের টিকিট ভাড়া বৃদ্ধি না করার জন্য রেলপথ কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানাই।

মাহবুবউদ্দিন চৌধুরী

লেখক ও গণমাধ্যমকর্মী

ফরিদাবাদ-গেন্ডারিয়া, ঢাকা

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত