ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আবার সেন্টমার্টিন

স্থায়ী ব্যবস্থা নিন
আবার সেন্টমার্টিন

বাংলাদেশের প্রধান পর্যটন আকর্ষণ প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনকে প্রাকৃতিক অবস্থায় ফিরিয়ে এনে স্থায়ীভাবে অবস্থানের কথা থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে তা সম্ভব হয়নি। একের পর এক নতুন নতুন স্থাপনা তৈরি, বন উজাড়, মোটরসাইকেল চালিয়ে পরিবেশ নষ্ট ইত্যাদি কার্যক্রম চলেই আসছে। মাঝেমধ্যে কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে তৎপর হয়, তখন কিছু কাজ দেখা যায়। আবার পরে যে অবস্থা ছিল, তাই হয়ে যায়। বিষয়টি ঢাকা শহরের ফুটপাত উচ্ছেদের মতো। হঠাৎ করেই ফুটপাত খালি করা হয়, আবার পরে যে অবস্থা ছিল, সে অবস্থাতেই ফিরে আসে। সেন্টমার্টিন দ্বীপেরও একই অবস্থা। গত ১৯ জানুয়ারি সেন্টমার্টিনে ৯টি রিসোর্টের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন। এছাড়া দ্বীপের বালিয়াড়ি দখল করে ১০টি অবৈধ স্থাপনাও উচ্ছেদ করা হয়েছে। এ জন্য আমরা তাদের সাধুবাদ জানাই।

সেন্টমার্টিন একটি প্রবাল দ্বীপ। পৃথিবীর পর্যটকদের আকর্ষণ অনেক বেশি এ ধরনের দ্বীপের প্রতি। কেননা, এই দ্বীপগুলো চারদিকে থেকে সাগরের ভেতরে প্রবাল প্রাচীর দিয়ে ঘেরা থাকে। ফলে এর চারপাশের সাগর সব সময়ই শান্ত থাকে। অন্য সৈকতের মতো বড় বড় ঢেউ থাকে না। বিদেশিরা দিনের পর দিন এই শান্ত সৈকতে সূর্যস্নান করতে ভালোবাসে। আমাদের সেন্টমার্টিন দ্বীপের মতো একটি দেশ হলো মালদ্বীপ। এই দেশটিও প্রবাল প্রাচীর দিয়ে ঘেরা। এখানেও বড় বড় ঢেউ থাকে না। এ জন্যই বিশ্বের পর্যটকরা হুমড়ি খেয়ে পড়ে এই দ্বীপে। আমরাও আমাদের সেন্টমার্টিনকে মালদ্বীপের মতো করে সাজাতে পারি। যেখানে বিদেশি পর্যটকরা এসে ভিড় জমাবে। আমাদের প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় হবে। আমাদের পর্যটন থেকে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করতে হলে তার প্রধান কেন্দ্র হবে সেন্টমার্টিন। অন্য কোনো স্থান থেকে এত পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব হবে না। এ কারণেই সেন্টমার্টিনের গুরুত্ব অনেক। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, এই গুরুত্বটা কর্তৃপক্ষ বোধ হয় ঠিকমতো বুঝতে পারছে না। মাঝে মাঝে হয়তো মনে হয়, দ্বীপটির প্রতি নজর দিতে হবে। সেই মতো কিছু তৎপরতা দেখা যায়। আবার তা ভুলে যাওয়া হয়।

আমরা মনে করি সময় বেঁধে দিয়ে এই দ্বীপটিকে প্রাকৃতিক পরিবেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। অর্থাৎ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কাজটি সম্পন্ন করতে হবে। এখনও অসংখ্য স্থাপনা রয়ে গেছে সেখানে। যার ফলে পরিবেশ দূষণ তো হচ্ছেই, সেই সঙ্গে দ্বীপটির নৈস্বর্গিক চেহারা বদলে যাচ্ছে। যারা বেড়াতে যাচ্ছেন, তাদের প্রতিও নজর নেই কারও। পুরো দ্বীপটি ময়লা-আবর্জনায় পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে।

আমরা মনে করি, পুরো দ্বীপটি পর্যটন করপোরেশনকে দিয়ে দ্বীপটির সংস্কারসহ আগের অবস্থায় অর্থাৎ প্রাকৃতিক অবস্থায় যেমন ছিল, সেই রূপে ফিরিয়ে আনা দরকার। প্রয়োজনে সব স্থাপনা, হোটেল, মোটেল উচ্ছেদ করে শুধু কয়েকটি উচ্চমানের রিসোর্ট সেখানে রাখা যেতে পারে, যেখানে বিদেশিদের থাকার সব রকম সুবিধা থাকবে। দেশের পর্যটকরাও কেউ বেড়াতে গেলে একই সুবিধা ভোগ করতে পারবে। সেখানে যাতায়াত সীমিত করতে হবে। যত লোক খুশি যেতে পারবে না। এই ভাবে পরিকল্পনার মাধ্যমে দ্বীপটিকে প্রধান পর্যটন আকর্ষণ হিসেবে তৈরি করতে হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত